কলকাতা, 9 জুন: “কাজল শেখ আর অনুব্রত মণ্ডল রাম-লক্ষ্মণের মতো ৷ ছোট আর বড় ভাই’’, সোমবার এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ ৷
কাজল-কেষ্টকে নিয়ে তাঁর সংযোজন, ‘‘ছোট ছোট বিষয়ে হয়তো মতপার্থক্য থাকতে পারে ৷ কিন্তু এরা হচ্ছে এক পরিবারের ৷ তৃণমূল একটা পরিবার৷ সেখানে কখনও কখনও ইস্যুভিত্তিক কোনও মতপার্থক্য হতে পারে ৷ কিন্তু নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মাথার উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ গোটা পার্টি এক ৷”
অনুব্রত-কাজল নিয়ে রাজ্যবাসী এখন চর্চায় ৷ এর জন্য ওই দুই নেতার কার্যকলাপ নয়, তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দায়ী করেছেন সংবাদমাধ্যমকেই ৷ তাঁর দাবি, “বীরভূম জেলা তৃণমূলে কোনও পার্থক্য নেই ৷ তৃণমূল ভারতবর্ষের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল ৷ একটা পরিবারের মতো ৷ পরিবার যখন বড় হয়, তখন মাঝেমধ্যে সদস্যদের মধ্যে ছোটখাটো বিষয়ে ঝগড়া হয়েই থাকে ৷ এক্ষেত্রে ভিত্তিহীন বিষয় নিয়ে মিডিয়ার লোকজন হইচই করে ৷”

অনুব্রত প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন শুভেন্দু অধিকারীকেও টেনে এনেছেন কুণাল ৷ সংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তাঁর মন্তব্য, “যাত্রা করছে শুভেন্দু অধিকারী ৷ আপনারা শুভেন্দু অধিকারীর ভিডিয়োটি দেখান ৷ যেখানে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে বলছে, আমার জুতোর নীচে থাকে৷ আপনাদের আর্কাইভ, লাইব্রেরিগুলো কি তৃণমূলের জন্য রাখা আছে ? আপনাদের সেই লাইব্রেরিতে এখন শুভেন্দু অধিকারীর পুরনো ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না ?’’
কুণাল আরও বলেন, ‘‘মদন মিত্র আজ, মদন মিত্র গতকাল ৷ অনুব্রত মণ্ডল আজ, অনুব্রত মণ্ডল গতকাল ৷ তাহলে শুভেন্দু অধিকারী আজ, শুভেন্দু অধিকারী গতকাল কেন হবে না ? জঙ্গলকন্যা বীরবাহা হাঁসদার উদ্দেশ্যে কটুক্তি করার পর ক্ষমা পর্যন্ত চাননি শুভেন্দু অধিকারী ৷ অনুব্রত মণ্ডল খারাপ কথা বলার পর তৃণমূল তাঁকে চার ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাইয়েছে ৷” এতেই অনেকের প্রশ্ন, বারবার উচ্চারণের অযোগ্য ভাষায় অনুব্রত ব্যক্তিগত আক্রমণ করে গেলেও দল তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা হয়নি কেন, তার উত্তর নেই কুণালের কাছে ৷
এদিন জাতীয় মহিলা কমিশনকেও একহাত নিয়েছেন কুণাল ৷ তিনি বলেন, “উন্নাও, হাথরাস, প্রয়াগরাজের সময় জাতীয় মহিলা কমিশন কোথায় ছিল ? মনিপুরে যায় না কেন ? দিল্লিতে যায় না কেন ? জাতীয় মহিলা কমিশন কেন্দ্রের ৷ বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে ব্যবহার করে ৷ তারা এখন বিভিন্ন নাটক করছে ৷”
কুণাল এদিন বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ বলে কিছু নেই ৷ যদি থাকে তবে তার জন্য দায়ী বিএসএফ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (অমিত শাহ) ৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কখনও সীমান্তে অনুপ্রবেশ বন্ধে কোনও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ করেননি ৷ আগে সীমান্তের 15 কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা দেখতে পারত বিএসএফ ৷ কেন্দ্রীয় সরকার সেই আইন সংশোধন করে 15 কিলোমিটার থেকে ওই দূরত্ব 50 কিলোমিটার করেছে ৷ রাজ্য সরকার এই এলাকায় কাজ করে না ৷ ফলে অনুপ্রবেশ হয়ে থাকলে তার দায়ও কেন্দ্রের ৷”
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন, 2026 সালে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের পতন হবে ৷ এই প্রসঙ্গে কুণালের প্রতিক্রিয়া, “তামিলনাডুতে বসে থাকা একজন বলছেন, তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার গঠন করবেন ৷ তাঁদের সেই স্বপ্ন কখনোই পূরণ হবে না ৷ অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদি এর আগেও অনেক ফাঁপা দাবি করেছেন ৷ এবার পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির গ্যারান্টি বাজেয়াপ্ত হবে ৷”