মালদা, 11 এপ্রিল: ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই হিন্দুত্ব ইস্যুতে সরব হতে দেখা যাচ্ছে বিজেপিকে ৷ শুক্রবার মালদায় দলীয় এক কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে হিন্দুত্ব ইস্যুকে সামনে রেখেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের হিন্দু নাগরিকদের বিজেপি এই দেশের নাগরিকত্ব দিয়েছে । এই মানুষগুলোকে নিয়ে সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস এতদিন রাজনীতি করেছে । এই মানুষগুলোকে নাগরিকত্ব দেয়নি । তৃণমূল এখনও এর বিরোধিতা করছে । স্টেশন পোড়ানো হল, বাস ভেঙে দেওয়া হল, কারা করল ? ওপার বাংলার রোহিঙ্গারা । তৃণমূল এদের রেশন কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড করে দিচ্ছে । 62 লক্ষ রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে । এরা কেউ এখানে থাকে না ।’’
দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, ‘‘রাজ্যজুড়ে যে গোষ্ঠীর লড়াই চলছে, তা ওপার বাংলার লোকজন করছে । ওপার বাংলার দুষ্কৃতীরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন । কেন্দ্রীয় সরকার কাঁটাতারের জন্য টাকা দিলেও রাজ্য সরকার জমি দিচ্ছে না । কারণ, এদের দিয়েই ভোটের সময় রিগিং করবে, লুঠ করবে ।’’
মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, ‘‘পুলিশ বারবার বলেছে, নেতারা বলেছেন, অস্ত্র নিয়ে নামা ঠিক নয় । এই সরকারের ওপর হিন্দু সমাজের আস্থা নেই । এই সরকারের আমলে অশান্তি হচ্ছে । রামনবমীতে মানুষ তা বুঝিয়ে দিয়েছে । আজ আমরা কিছু মানুষ এনে সরকারকে সচেতন করতে এসেছি । শক্তি প্রদর্শন করতে আসিনি । ওপার বাংলায় চিন্ময় প্রভু এখনও জেলে আছেন । এপার বাংলায় হিরন্ময় প্রভুর ওপর অত্যাচার চালানো হয়েছে । সন্ন্যাসীদের ভয় দেখিয়ে পিছিয়ে দেওয়া যাবে না ।”
মালদায় যে কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন, সেটি ছিল বিজেপির প্রশাসনিক ভবন অভিযান ৷ এই অভিযানকে ঘিরে সকাল থেকে প্রশাসনিকভবন চত্বর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল । প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশের মূল গেটে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছিল । শুক্রবার দুপুরে মালদা শহরের টাউন হল একটি মিছিল শহরের একাংশ পরিক্রমা করে জেলা প্রশাসনিক ভবন চত্বরে পৌঁছয় ।
দিলীপ ঘোষ ছাড়াও মিছিলে পা মেলান উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু, বিজেপির চার বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি, গোপাল সাহা, চিন্ময় দেব বর্মন, জয়েল মুর্মু-সহ বিজেপির জেলা নেতৃত্বরা । মিছিল জেলা প্রশাসনিকভবন চত্বরে পৌঁছতেই সামনে থাকা ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান বিজেপি কর্মীরা । তবে সামনের বাঁশের ব্যারিকেড টপকাতে পারেননি তাঁরা ।
তার পর দিলীপ ঘোষ সেখানে বক্তব্য রাখেন ৷ তিনি হিন্দুত্ব, মোথাবাড়ির সাম্প্রতিক ঘটনার পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি বাতিলের প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন তিনি ৷ দিলীপ ঘোষ বলেন, “এই সরকারের দুর্নীতির কারণে 20 হাজার শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে । যে শিক্ষকদের স্কুলে বসে পড়ানোর কথা ছিল, তাঁরা রাস্তায় ধর্নায় বসেছেন । আরজিকরের ঘটনার পেছনেও দুর্নীতি রয়েছে । সেই দুর্নীতিকে চাপা দিতেই খুন ও ধর্ষণ । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন, ততদিন হিংসা-দুর্নীতি কিছুই বন্ধ হবে না । যতদিন এই চোরে সরকার যাচ্ছে লড়াই চলবে ।”