ETV Bharat / politics

চা-বলয়ে বড় ধাক্কা, ফুল বদলে তৃণমূলে জন বার্লা - JOHN BARLA JOINS TMC

উন্নয়নের কাজে বাধা পেয়ে বিজেপি ছাড়ছেন ৷ তৃণমূলে যোগ দিয়ে এমনই দাবি উত্তরের চা-বলয়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতা জন বার্লার ৷

ETV BHARAT
তৃণমূলে যোগ দিলেন জন বার্লা (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 15, 2025 at 3:31 PM IST

4 Min Read

কলকাতা, 15 মে: দীর্ঘদিন ধরে জল্পনা চলছিল । লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই উলটো সুর বাজছিল প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ জন বার্লার গলায় । অবশেষে সব জল্পনার অবসান । ফুল বদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখালেন বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সংসদ । উন্নয়নের কাজে বাধা পেয়েই তিনি বিজেপি ছাড়লেন বলে দাবি করেন জন বার্লা ৷

বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাত থেকে ঘাসফুলের পতাকা নিজের হাতে তুলে নিলেন উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এই চা-বলয়ের নেতা । কয়েকদিন আগে, জন বার্লাকে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের শীর্ষনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভায় । তখনই রাজনীতির কারবারিরা মনে করছিলেন, শীঘ্রই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন । সেই জল্পনাই আজ সত্যি হল ৷

এই বিজেপি নেতার তৃণমূলে যোগদানের সময় তৃণমূল ভবনে উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ৷ ছিলেন রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এবং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও । বর্ষিয়ান নেতার তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে অরূপ বিশ্বাস বলেন, "দীর্ঘদিন চা-বলয়ে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জন বার্লা । তিনি বিশিষ্ট আদিবাসী নেতা, জনগণের মাঝে তাঁর ভাবমূর্তি যথেষ্ট ভালো । দীর্ঘদিন ধরেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মা-মাটি-মানুষের জন্য কাজ করতে চাইছিলেন । আজ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর যোগদানের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন । কেন তিনি দল ছাড়লেন, সেটা তিনি নিজেই বলবেন । তবে এটা ঠিক, একটা একটা করে উইকেট পড়ছে বিজেপির ।"

এদিকে, দলবদলের কারণ হিসেবে জন বার্লা জানিয়েছেন, তিনি উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন । চা-বলয়ের মানুষদের জন্য হাসপাতাল তৈরি করতে চেয়েছিলেন । কিন্তু তাঁর দলের নেতারাই পেছন থেকে তাঁকে আটকে দিয়েছেন ।

এ ব্যাপারে সরাসরি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম উল্লেখ করেন জন বার্লা । তাঁর দাবি, উত্তরবঙ্গে সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় খরচে একটি হাসপাতাল তৈরি করার উদ্যোগ তিনি নিয়েছিলেন ৷ তবে শুভেন্দু অধিকারী সেই উদ্যোগে বাধা হয়ে দাঁড়ান । বার্লার কথায়, এমন দল তিনি করতে চান না, যেখানে মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে বাধা পেতে হয় ।

এদিন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসাও করেন তিনি । মুখ্যমন্ত্রীর সকলকে নিয়ে চলা, সব ধর্মকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছে বলে জানান বার্লা ৷ সেই কারণেই তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বলে দাবি করেছেন ৷

এদিকে, এ প্রসঙ্গে রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য তীব্র কটাক্ষ করেছেন জন বার্লাকে ৷ শমীক বলেন, "উনি জানেন উনি বল ঢোকাতে পারেননি । আলিপুরদুয়ার থেকে আমাদের সাংসদ মনোজ টিগ্গা নির্বাচিত হয়ে গিয়েছেন । তবে এখন জন বারলা যেখানেই থাকুন সুখে থাকুন, আনন্দে থাকুন । আর বিধানসভায় যদি তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাহলে আমরা তাঁকে আনন্দে রাখার জন্য বিশ্রামে পাঠিয়ে দেব ।"

এদিন তৃণমূলকে একহাত নিয়ে শমীক বলেন, "উত্তরবঙ্গকে যদি সবথেকে বেশি কেউ বঞ্চিত করে থাকে তাহলে সেটা বর্তমান তৃণমূল সরকার । আমরা ছাত্রাবস্থা থেকে শুনে আসছি, বঞ্চিত উত্তরবঙ্গ, অবহেলিত উত্তরবঙ্গ, পিছিয়ে পড়া উত্তরবঙ্গ । উত্তরবঙ্গের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরকন্যা তৈরি করেছিলেন ৷ বলেছিলেন যে, নিয়ম করে এখানে মন্ত্রী এবং আমলারা বসবেন ৷ উত্তরবঙ্গের মানুষকে আর কষ্ট করে কলকাতায় আসতে হবে না । উত্তরবঙ্গের জন্য একবার বাজেটে বরাদ্দটা দেখুন । যে টাকা মুখ্যমন্ত্রী দেন তাতে জল গরম হয় না ।"

এদিন জন বার্লা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তোপ দাগায় তারও জবাব দিয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য ৷ তিনি বলেন যে, "বারবার বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ করার মানে হচ্ছে যে তিনি প্রাসঙ্গিক । তাঁর পারফরমেন্স উত্তরবঙ্গের মানুষ দেখেছেন । আর বিরোধী দলনেতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা কোথায় ? দূর দূর পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে জন বার্লার কোনও সম্পর্ক নেই । আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তঃসারশূন্য অবস্থা হয়েছে । শুভেন্দু অধিকারীকে বারবার আক্রমণ করে তারা এটাই প্রমাণ করছে ।"

কলকাতা, 15 মে: দীর্ঘদিন ধরে জল্পনা চলছিল । লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই উলটো সুর বাজছিল প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ জন বার্লার গলায় । অবশেষে সব জল্পনার অবসান । ফুল বদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখালেন বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সংসদ । উন্নয়নের কাজে বাধা পেয়েই তিনি বিজেপি ছাড়লেন বলে দাবি করেন জন বার্লা ৷

বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাত থেকে ঘাসফুলের পতাকা নিজের হাতে তুলে নিলেন উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এই চা-বলয়ের নেতা । কয়েকদিন আগে, জন বার্লাকে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের শীর্ষনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভায় । তখনই রাজনীতির কারবারিরা মনে করছিলেন, শীঘ্রই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন । সেই জল্পনাই আজ সত্যি হল ৷

এই বিজেপি নেতার তৃণমূলে যোগদানের সময় তৃণমূল ভবনে উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ৷ ছিলেন রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এবং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও । বর্ষিয়ান নেতার তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে অরূপ বিশ্বাস বলেন, "দীর্ঘদিন চা-বলয়ে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জন বার্লা । তিনি বিশিষ্ট আদিবাসী নেতা, জনগণের মাঝে তাঁর ভাবমূর্তি যথেষ্ট ভালো । দীর্ঘদিন ধরেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মা-মাটি-মানুষের জন্য কাজ করতে চাইছিলেন । আজ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর যোগদানের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন । কেন তিনি দল ছাড়লেন, সেটা তিনি নিজেই বলবেন । তবে এটা ঠিক, একটা একটা করে উইকেট পড়ছে বিজেপির ।"

এদিকে, দলবদলের কারণ হিসেবে জন বার্লা জানিয়েছেন, তিনি উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন । চা-বলয়ের মানুষদের জন্য হাসপাতাল তৈরি করতে চেয়েছিলেন । কিন্তু তাঁর দলের নেতারাই পেছন থেকে তাঁকে আটকে দিয়েছেন ।

এ ব্যাপারে সরাসরি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম উল্লেখ করেন জন বার্লা । তাঁর দাবি, উত্তরবঙ্গে সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় খরচে একটি হাসপাতাল তৈরি করার উদ্যোগ তিনি নিয়েছিলেন ৷ তবে শুভেন্দু অধিকারী সেই উদ্যোগে বাধা হয়ে দাঁড়ান । বার্লার কথায়, এমন দল তিনি করতে চান না, যেখানে মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে বাধা পেতে হয় ।

এদিন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসাও করেন তিনি । মুখ্যমন্ত্রীর সকলকে নিয়ে চলা, সব ধর্মকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছে বলে জানান বার্লা ৷ সেই কারণেই তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বলে দাবি করেছেন ৷

এদিকে, এ প্রসঙ্গে রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য তীব্র কটাক্ষ করেছেন জন বার্লাকে ৷ শমীক বলেন, "উনি জানেন উনি বল ঢোকাতে পারেননি । আলিপুরদুয়ার থেকে আমাদের সাংসদ মনোজ টিগ্গা নির্বাচিত হয়ে গিয়েছেন । তবে এখন জন বারলা যেখানেই থাকুন সুখে থাকুন, আনন্দে থাকুন । আর বিধানসভায় যদি তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাহলে আমরা তাঁকে আনন্দে রাখার জন্য বিশ্রামে পাঠিয়ে দেব ।"

এদিন তৃণমূলকে একহাত নিয়ে শমীক বলেন, "উত্তরবঙ্গকে যদি সবথেকে বেশি কেউ বঞ্চিত করে থাকে তাহলে সেটা বর্তমান তৃণমূল সরকার । আমরা ছাত্রাবস্থা থেকে শুনে আসছি, বঞ্চিত উত্তরবঙ্গ, অবহেলিত উত্তরবঙ্গ, পিছিয়ে পড়া উত্তরবঙ্গ । উত্তরবঙ্গের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরকন্যা তৈরি করেছিলেন ৷ বলেছিলেন যে, নিয়ম করে এখানে মন্ত্রী এবং আমলারা বসবেন ৷ উত্তরবঙ্গের মানুষকে আর কষ্ট করে কলকাতায় আসতে হবে না । উত্তরবঙ্গের জন্য একবার বাজেটে বরাদ্দটা দেখুন । যে টাকা মুখ্যমন্ত্রী দেন তাতে জল গরম হয় না ।"

এদিন জন বার্লা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তোপ দাগায় তারও জবাব দিয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য ৷ তিনি বলেন যে, "বারবার বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ করার মানে হচ্ছে যে তিনি প্রাসঙ্গিক । তাঁর পারফরমেন্স উত্তরবঙ্গের মানুষ দেখেছেন । আর বিরোধী দলনেতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা কোথায় ? দূর দূর পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে জন বার্লার কোনও সম্পর্ক নেই । আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তঃসারশূন্য অবস্থা হয়েছে । শুভেন্দু অধিকারীকে বারবার আক্রমণ করে তারা এটাই প্রমাণ করছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.