রানাঘাট, 22 এপ্রিল: এতদিন সিএএ নিয়ে বারবার সরব হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৷ রবিবার রানাঘাটের নির্বাচনী সভা থেকে প্রথমবার সিএএ'কে সমর্থন করার কথা জানালেন তিনি ৷ তবে তাঁর জন্য বেঁধে দিলেন শর্তও ৷ অভিষেক এ দিন বলেন, "যারা সিএএর জন্য আবেদন করছেন তাদের সাতদিনের মধ্যে নাগরিকত্ব দিন ৷ আর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যদি বলে সিএএর পর এনআরসি হবে না, তাহলে আমি সিএএকে সমর্থন করব ৷ আমি বুক ঠুকে বলে গেলাম ৷"
আগামী 13 মে নদিয়ার কৃষ্ণনগর এবং রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। তার আগে রবিবার নদিয়ার রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের দত্তপুলিয়া গার্লস হাইস্কুলে তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর সমর্থনে জনসভা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এ দিনও সিএএ নিয়ে সরব হন তিনি ৷ তাঁর কথায়, "বিজেপির নেতারা বলছে সিএএ জন্য আবেদন করুন, বিজেপির কোনও নেতার সিএএর জন্য আবেদন করেছে ? সিএএর জন্য আবেদন করার আগে আপনাকে ঘোষণা করতে হবে আমি বাংলাদেশি ৷ সঙ্গে সঙ্গে আপনার রেশন, আধার, ভোটার কার্ড বাতিল করে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার ৷"
গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, "বিজেপি জুমলাবাজেদের দল ৷ ভাঁওতাবাজি, প্রতারণা করে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় ৷ বিজেপির মাথার চুল থেকে পায়ের নখ সব দু'নম্বরী ৷ কোনও সভ্য লোক বিজেপি করে না ৷" এনআরসি নিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, "আপনাকে প্রথমে ঘোষণা করতে হবে আমি পাকিস্তানি অথবা আফগানিস্তানি । এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে । এনআরসি করে আপনাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে । ঠিক যেমনটা অসমে হয়েছে । আর আমরা থাকতে এটা হতে দেব না ।"
এবারও রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন জগন্নাথ সরকার । 2019 সালের লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়লাভ করেছিলেন তিনি। জগন্নাথ সরকারকে কটাক্ষ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, "আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি জগন্নাথ সরকার কোথাও গত পাঁচ বছরে উন্নয়নমূলক আলোচনা করেননি । শুধু তাই নয়, রানাঘাটবাসীর জন্য লোকসভায় তিনি কোন প্রশ্ন করেননি । শুধুমাত্র দিল্লির তাবেদারি করে গিয়েছেন । দিল্লি থেকে যা নির্দেশ করা হয়েছে তিনি তাই শুনেছেন । আর এসি ঘরে বসে মানুষের মজা দেখেছেন ।"
অন্যদিকে শান্তিপুর এবং ফুলিয়ার তাঁত শিল্পীদের নিয়েও বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন, "বিজেপি তাঁত শিল্পীদের জন্য কোনও কাজ করেনি। আমরা কথা দিয়েছিলাম তাঁতিদের সমবায়ের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় আনব। আমরা সেই কাজ সম্পূর্ণ করেছি । আগামিদিনে এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁতিরা আরও সাহায্য পাবে ।"
অভিষেক দাবি করেন, "আমরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি সাধারণ মানুষকে সাহায্য করছি । আর বিজেপির কাজ হল, প্যান কার্ড ও আধার কার্ড লিংক করার নাম করে হাজার হাজার টাকা মানুষের কাছ থেকে তোলাবাজি করা । আমরা যত দিচ্ছি আর ওরা তত কেড়ে নিচ্ছে ।"
আরও পড়ুন: