ওয়াশিংটন, 8 এপ্রিল: পরমাণু চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা চায় ওয়াশিংটন ! শনিবার সরাসরি ইরানের সঙ্গে বৈঠকে বসবে আমেরিকা ৷ সোমবার এ কথা জানান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ আলোচনা সফল না-হলে 'বড় বিপদে' পড়বে ইরান ৷ এমন হুঁশিয়ারিও দেন তিনি ৷
পরমাণু-কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে না-এলে ইরানের উপর বোমা ফেলা হবে বলে দিন কয়েক আগে হুঁশিয়ারি দেন আমেরিকার প্রথম নাগরিক ৷ তবে এবার চুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে হবে তেহরানকে ৷ ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর এই বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, "তেহরান কোনও মতেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না ৷ এই বিষয়ে আমরা সরাসরি তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করছি ৷ খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হবে দুই দেশ ৷"

2018 সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু সংক্রান্ত আলোচনা থেকে বেরিয়ে আসেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ তারপর থেকে এই বিষয়ে দু'দেশের মধ্যে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হতে থাকে ৷ যদিও, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ইরানের সঙ্গে নতুন করে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হন তিনি ৷ মার্চের শুরুতে এই বিষয়ে আলোচনার জন্য ইরানের শীর্ষ নেতাকে চিঠি লেখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ৷ চিঠিতে, পরমাণু চুক্তিতে সম্মতি জানানোর জন্য সময়সীমাও বেঁধে দেন ট্রাম্প ৷ কিন্তু, ইরানের দাবি এভাবে চাপের বাতাবরণে তারা কোনও আলোচনা করবে না ৷
এদিন, এই প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টেকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরান সামঝোতায় না-এলে বড় বিপদে পড়বে ৷ আলোচনা সফল না-হলে ইরানের জন্য সেটা মোটেই ভালো হবে না ৷ খুব খারাপ দিন আসতে চলেছে ইরানের ৷"
উল্লেখ্য, আমেরিকার পাশাপাশি একাধিক দেশ ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ করছে ৷ যদিও বিষয়টি বারবার অস্বীকার করেছে তেহরান ৷ এই আবহে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার পক্ষে সুর চড়াতে শুরু করেন ট্রাম্প ৷ এমনকী, গত 12 মার্চ এই বিষয়ে সরাসরি আলোচনায় আহ্বান জানিয়ে ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি-কে চিঠি লেখেন ট্রাম্প ৷ তবে, সেদেশের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান পরিষ্কার জানান, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি কোনও আলোচনায় তাঁরা বসবেন না ৷ পরোক্ষ আলোচনায় রাজি তাঁরা ৷

এদিকে, আলোচনায় কোনও মধ্যস্থতাকারীকে চাননা বলে জানান ট্রাম্প ৷ বরং মার্কিন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, পরমাণু চুক্তিতে সম্মতি না-জানালে ইরানের উপর বোমা নিক্ষেপ করা হবে ৷ তাতেও কাজ না-হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে শুল্ক বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি ৷ এদিনও সেই একই কথা বলেন ট্রাম্প ৷ এদিন তাঁর বক্তব্যে সহমত জানান ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ৷
উল্লেখ্য, গাজা-ইজরায়েল যুদ্ধে প্রথম থেকে হামাস, লেবাননের চরমপন্থী সংগঠন হিজবুল্লা এবং ইয়েমেনের হাউতি গোষ্ঠীকে সমর্থন জানিয়েছে ইরান ৷ নেতানিয়াহুর মতে, "এই আলোচনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে ৷ তবে, যাইহোক না কেন, ইরানের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা কোনও মতেই তুলে দেওয়া সম্ভব নয় ৷"