কিভ, 10 জুন: গত তিন বছরের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালাল মস্কো ৷ সোমবার গভীর রাতে ইউক্রেনের উপর ফের ড্রোন হামলা চালায় রাশিয়া ৷
রাশিয়ার তরফে প্রায় 500টি ড্রোন ছোড়া হয়েছে এমনটাই দাবি করেছে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী ৷ ক্রেমলিন সরাসরি আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ৷ যেখানে শান্তি আলোচনার মধ্য দিয়ে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে এখনও সেরকম কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি । যার ফলে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছনো যাচ্ছে না ৷
এদিকে ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর দাবি, রাশিয়া রবিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশে 479টি ড্রোন ছাড়াও, বিভিন্ন ধরণের 20টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ৷ বিমান বাহিনীর মতে, ব্যারাজটি মূলত মধ্য এবং পশ্চিমাঞ্চলকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছিল । ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর আরও দাবি, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা 277টি ড্রোন এবং 19টি ক্ষেপণাস্ত্রকে সফলভাবে ধ্বংস করেছে ৷ মাত্র 10টি ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে । এতে একজন ব্যক্তি আহত হয়েছেন ।
অন্যদিকে, প্রায় 1000 কিলোমিটার (620 মাইল) ফ্রন্ট লাইনের পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব অংশে রাশিয়ার নতুন করে যুদ্ধক্ষেত্রে অভিযানের সঙ্গে সঙ্গে বিমান হামলা চালিয়েছে । ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রবিবার রাতে জানিয়েছেন, কিছু কিছু অঞ্চলে পরিস্থিতি খুবই কঠিন । তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
ইউক্রেন তার বৃহত্তর শত্রুর বিরুদ্ধে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ৷ কিন্তু এই লড়াইয়ের জন্য বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আরও সামরিক সহায়তার প্রয়োজন । কিন্তু যুদ্ধের বিষয়ে মার্কিন নীতি সম্পর্কে অনিশ্চয়তা সন্দেহ তৈরি করেছে জেলেনস্কি সরকারের ৷
অতীতেও রাশিয়ার ড্রোন হামলার প্রত্যাঘাত করেছে ইউক্রেন ৷ 1 জুন রাশিয়ার বিমান ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন ৷ এই হামলার পরিধি ছিল বিস্তৃত ৷ ইউক্রেনীয় জেনারেল স্টাফ জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় সীমান্ত থেকে প্রায় 650 কিলোমিটার (প্রায় 400 মাইল) উত্তর-পূর্বে অবস্থিত রাশিয়ার নিজনি নভগোরোড অঞ্চলের সাভাসলেকা বিমানঘাঁটিতে অবস্থানরত দুটি রাশিয়ান যুদ্ধবিমানে বিশেষ অভিযান বাহিনী হামলা চালানো হয় ৷
ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনে এই আক্রমণ রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে ড্রোন হামলার প্রতিশোধ । রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে, পশ্চিম রিভনে অঞ্চলের ডুবনোতে একটি ইউক্রেনীয় বিমান ঘাঁটিতে হামলা ছিল তারই একটি অংশ ।
ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের মধ্যে সাম্প্রতিক দুই দফায় শান্তি আলোচনা হয় ৷ তবে তাতে বন্দিদের বিনিময়ের পাশাপাশি হাজার হাজার মৃত এবং গুরুতর আহত সৈন্য বিনিময়ের প্রতিশ্রুতির বাইরে কোনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি । রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি শর্ত পূরণ না-হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন ।