কলকাতা, 25 এপ্রিল: ডেঙ্গি ছাড়াও ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাবও এখন চিন্তার। এখনও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয় । মূলত বর্ষাকালে কোথাও জমা জল থাকলে এই রোগের প্রকোপ দেখা যায় । কিন্তু এখন সেই ভাবনা বদলেছে, সারা বছরই দেখা যাচ্ছে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ । চিকিৎসকদের কথায়, এই গরমে ম্যালেরিয়া হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে । তাই বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসে সাধারণ মানুষকে আরও সচেতনতার বার্তা দিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিক ।
- গরমেও ম্যালেরিয়া হতে পারে ?
চিকিৎসক কাজলকৃষ্ণ বণিক বলেন, "মূলত ম্যালেরিয়ার মশা জন্মায় জমা জল, অপরিষ্কার জায়গায় । তবে এই সময় ম্যালেরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে । কারণ এই আবহাওয়ায় ম্যালেরিয়ার মশা জন্মাতে পারে । এবার এই সময় বহু মানুষ গরমের জন্য বাড়ির ছাদে অথবা মশারি না-টাঙিয়ে ঘুমান । ফলে ঘুমের মধ্যে মশা কামড়ানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে । তাই এখন সবচেয়ে বেশি সচেতনতা দরকার ৷"
- ম্যালেরিয়ার পরীক্ষা কখন করানো প্রয়োজন ?
মূলত জ্বর, বমি, গা-হাত-পায়ে যন্ত্রণা, মাথা যন্ত্রণা, কাঁপুনি ম্যালেরিয়ার লক্ষ্মণ । এগুলি দেখা দিলেই জ্বরের তিনদিনের মাথায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করানো দরকার । সব জায়গায় এখন র্যাপিড ম্যালেরিয়া কিট পাওয়া যায় । সেখান থেকে পরীক্ষা করে নেওয়া যায় বলেই জানান চিকিৎসক ।
- কাদের আক্রান্ত হওয়ায় ভয় থাকে বেশি ?
চিকিৎসক বলেন, "সকলের ম্যালেরিয়া হতে পারে । কিন্তু ভয় থাকে গর্ভবতী মা, একদম ছোটো শিশু, পাঁচ বছরের কম বয়সি বাচ্চা আর যাদের কো-মর্বিডিটি থাকে তাদের নিয়ে । কারণ এদের অন্যদের তুলনায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে । তার ফলে এদের শরীরে ক্ষতির মাত্রা বেড়ে যায় ৷"
চিকিৎসকের মতে, অবশ্যই এই আবহাওয়াতেও মশারি ব্যবহার করতে হবে । মশারি কেনার সময় দেখে নিতে হবে ওই প্যাকেটে ‘LLIN’ লেখা আছে কি না ! যার অর্থ হল কীটনাশক নির্মূল মশারি । যা এখন খোলা বাজারেও পাওয়া যায় । এই মশারি সাধারণ মশারির তুলনায় ভালো কাজ করবে ।
চিকিৎসকের কথায়, ম্যালেরিয়া নির্মূল করতে এখন বহু ওষুধ আছে । আধুনিক ওষুধের গবেষণা চলছে । চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওই ওষুধ দ্রুত ডোজ অনুযায়ী চালু করতে হবে । সব ধরণের ম্যালেরিয়ার ওষুধ যেকোনও নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই বিনামূল্যে পাওয়া যাবে । ফলে কোনও সমস্যা হবে না । পাশাপাশি বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে । যাতে কোথাও জমা জল না-থাকে ।
আরও পড়ুন: