অতিরিক্ত যৌন আসক্তি এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি তার চিন্তাভাবনা এবং যৌন আচরণের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং তার মন সর্বদা যৌন উত্তেজনা বা অতি-যৌনতার চিন্তায় পূর্ণ থাকে ৷ ফলে তার বারবার যৌন কার্যকলাপ করার ইচ্ছা জাগে । এটি তার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তার সামাজিক ও মানসিক অভ্যাসের উপরও প্রভাব ফেলে । অতিরিক্ত যৌন আসক্তি অন্যান্য আসক্তির মতোই বিপজ্জনক । যখন একজন ব্যক্তি যৌন কার্যকলাপে আসক্ত হন, তখন তার সম্পূর্ণ মনোযোগ যৌনতা এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলির উপর থাকে । চাইলেও তার যৌন ইচ্ছা এবং কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হন না ।
অরিরিক্ত যৌন আসক্তি এবং এর জটিলতাগুলি কী কী ?
অরিরিক্ত যৌন আসক্তির গুরুতরতা সম্পর্কে আরও তথ্য দিতে গিয়ে, সিনিয়র মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ বীণা কৃষ্ণান বলেন, "এই আসক্তির কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি পর্নোগ্রাফি এবং হস্তমৈথুনের প্রতিও আসক্ত হয়ে পড়েন । অনেক ক্ষেত্রে যৌনইচ্ছা সম্পূর্ণ করার জন্য একজন ব্যক্তি একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন শুরু করেন ৷ যদি সঠিক সময়ে এই সমস্যাটি শনাক্ত না করা হয় এবং সময়মতো চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে ব্যক্তি তার আসক্তির কারণে যৌন অপরাধে জড়িত হওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে না ।

দৈনন্দিন জীবনও প্রভাবিত হয়: রোগীর অতিরিক্ত যৌন আসক্তি এতটাই বেড়ে যায় যে এটি তার দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলতে শুরু করে । আমরা যৌন আসক্তিকে বিভিন্ন নামেও জানি । এরমধ্যে রয়েছে বাধ্যতামূলক যৌন আচরণ, অতি-যৌনতা, পর্নোগ্রাফি, পর্নো সেক্স, যৌন বাধ্যতা । তবে যৌন আসক্তির মধ্যে যৌন কার্যকলাপের সময় সাধারণত যে কাজগুলি করা হয়, যেমন হস্তমৈথুন, যৌন টেক্সট পড়া, ফোন সেক্স, সাইবারসেক্স ৷ এছাড়াও যৌন আসক্তিতে ভুগছেন এমন ব্যক্তির একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছাও থাকে । যখন এই ধরনের কার্যকলাপ অতিরিক্ত হয়ে যায়, তখন কেবল রোগীর ব্যক্তিগত জীবনই প্রভাবিত হতে পারে না, বরং তাদের সম্পর্কেরও অবনতি হতে শুরু করে ।

যৌন আসক্তির কারণগুলি: ডঃ কৃষ্ণান বলেন, "কখনও কখনও মানসিক অসুস্থতা, অস্বাস্থ্যকর হরমোন, মস্তিষ্কের ক্ষতি করে এমন কোনও ভিডিয়ো বা পর্নোগ্রাফির মতো বিষয়বস্তু ক্রমাগত দেখা মানুষের মধ্যে এই আসক্তি তৈরি হতে পারে । এছাড়াও মানসিক চাপ, উদ্বেগ, শেখার অক্ষমতা এবং অবসেসিভ-কম্পলসিয়াল প্রবণতার কারণেও একজন ব্যক্তি এতে আসক্ত হতে পারেন । আজকাল, OTT অর্থাৎ অনলাইন টিভি চ্যানেলগুলিতে প্রদর্শিত ওয়েব সিরিয়াল এবং সিনেমাগুলিও মানুষকে আকর্ষণ করে এবং উত্তেজিত করে ৷ যার কারণে এই ধরণের মানুষের মন বেশিরভাগ সময় যৌনতা সম্পর্কিত চিন্তায় ভরা থাকে । এছাড়াও, যাদের পরিবারের সদস্যদের এই ধরনের আসক্তির ইতিহাস আছে তাদেরও যৌন আসক্তিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে । এমন অনেক মানসিক অবস্থা রয়েছে যার কারণে একজন ব্যক্তির মধ্যে এই ধরনের আসক্তি তৈরি হতে পারে ।"
ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, অতিরিক্ত যৌন আসক্তির লক্ষণগুলি নিম্নরূপ:
- যে ব্যক্তি সর্বদা যৌনতা নিয়ে চিন্তা করে
- যখন একজন ব্যক্তি একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন
- বেশিরভাগ সময় পর্নোগ্রাফি দেখে কাটান
- যে ব্যক্তি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না
- হস্তমৈথুনে আসক্ত হয়ে পড়া

অতিরিক্ত যৌন আসক্তির চিকিৎসা
ডাঃ কৃষ্ণান বলেন, "বিভিন্ন চিকিৎসা এবং ওষুধের সাহায্যে এই আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে । এই চিকিৎসার সাহায্যে, আক্রান্ত ব্যক্তির মানসিক শক্তিকে শক্তিশালী করা যেতে পারে যাতে সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং এই আসক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে । এছাড়াও জ্ঞানীয় আচরণগত থেরাপি, থেরাপিউটিক পদ্ধতি এবং ওষুধের সাহায্যে রোগীর চিন্তাভাবনা এবং আচরণকে অন্য দিকে কেন্দ্রীভূত করার চেষ্টা করা হয় । এছাড়াও ওষুধের সাহায্যে ব্যক্তির যৌন আবেগ কমাতে এবং মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করা হয় ।"
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)
- খারাপ খাদ্যাভ্যাসও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, খাদ্যতালিকায় এই পরিবর্তনগুলি করুন
- চুল পড়া ও ঘন ঘন ইউটিআই হালকাভাবে নেবেন না, এই ভিটামিনের অভাবের কারণ হতে পারে
- পুরুষদের কেন প্রতিদিন অন্তর্বাস পরিবর্তন করা প্রয়োজন ? কারণ জানেন কি
- বিট নাকি বেদানা ? গ্রীষ্মে শরীরে রক্তের পরিমাণ ঠিক রাখতে কোনটি বেশি উপকারী