হায়দরাবাদ: 30 বছর বয়সের পরে, মুখের বার্ধক্যের লক্ষণগুলি সাধারণত খারাপ ত্বক, চোখের চারপাশে সূক্ষ্ম রেখা, কপাল, মুখ এবং ঠোঁট, চোখের নীচে কালো দাগ ও ত্বকের আলগা হয়ে যাওয়া-সহ অনেক সমস্যার আকারে দেখা দেয় । যা সৌন্দর্যকে কমিয়ে দেয় ।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্বকের উপর বার্ধক্যের এই প্রভাবগুলির বৃদ্ধির গতি কেবল কমানো যায় না, কিছু সতর্কতা ও অভ্যাস দৈনন্দিন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করে ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখা যায় ।
কারণ: উত্তরাখণ্ডের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ আশা সাকলানি বলেন, "30 বছর বয়সের পরে, ত্বকে ফ্রেকলস, বলি বা ফাইন লাইন, নিস্তেজ ত্বক ও অমসৃণ টোনের মতো অনেক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে । বয়স বৃদ্ধির কারণে, নির্দিষ্ট হরমোনের মাত্রার ওঠানামা, ত্বকে কোলাজেন ও ইলাস্টিন উৎপাদনের গতি কমে যাওয়া, খাদ্য থেকে পুষ্টি শোষণের ক্ষমতা কমে যাওয়া, শরীরে জলের অভাব ও কিছু স্বাস্থ্য সমস্যাকে দায়ী করা যেতে পারে । এছাড়াও জীবনযাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু খারাপ অভ্যাস রয়েছে যেমন- খারাপ খাদ্যাভ্যাস, প্রয়োজনীয় পরিমাণে ঘুম না হওয়া, নিয়মিত ত্বকের সঠিক যত্ন না নেওয়া বা সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য কখনও কখনও এমন চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করা যা ত্বকের ক্ষতি করতে পারে ৷ এই নিয়মগুলি গ্রহণ করলে সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে । অনেক সময়, প্রবল সূর্যালোকের সরাসরি সংস্পর্শে থাকা অর্থাৎ সূর্যের ক্ষতিকর UV রশ্মিও ত্বকের সমস্যা বাড়াতে পারে ৷"
কীভাবে যত্ন নেবেন ত্বকের (How to take care) ?
ডাঃ আশা সাকলানি বলেন, "সাধারণভাবে ত্বকের প্রয়োজনীয় যত্ন নেওয়া, ভালো খাদ্যাভ্যাস ও ঘুমের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু ভালো অভ্যাস গ্রহণ ও আরও কিছু বিষয় মাথায় রাখলে ত্বককে তাড়াতাড়ি বার্ধক্য থেকে রক্ষা করা যায় । এছাড়াও, এই সময়ের মধ্যে, বেশিরভাগ দৃশ্যমান ত্বক সম্পর্কিত সমস্যাগুলিও অনেকাংশে হ্রাস পেতে পারে ।"
এর মধ্যে কিছু ভালো অভ্যাস ও সতর্কতা নিম্নরূপ...
- সর্বদা সঠিক সময়ে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন । খাদ্য থেকে পাওয়া পুষ্টি শুধু ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ রাখে না, অনেক রোগ থেকেও শরীরকে নিরাপদ রাখে । যতদূর সম্ভব অতিরিক্ত তেল মশলা বা পরিপাকতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে এমন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে ।
- শরীরে জলের অভাবে ত্বকে আর্দ্রতার অভাব দেখা দিতে পারে । যা কখনও কখনও ত্বকের শুষ্কতা, ফ্রেকলস, বলিরেখা, নিস্তেজ হয়ে যাওয়া বা ত্বকের প্রাকৃতিক আভা কমে যাওয়া-সহ আরও অনেক সমস্যার কারণ হতে পারে । প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পরিমাণ জল পান করা ও খাবারে তরলের পরিমাণ বাড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
- সূর্যের সরাসরি এক্সপোজার এড়ানো উচিত কারণ সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে । অতএব শীত হোক বা গ্রীষ্ম, যখনই আপনি রোদে বের হন, আপনার ত্বকে সর্বদা ভালো মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন । এছাড়া সম্ভব হলে মাথায় ক্যাপ বা ছাতা নিয়ে বাইরে বের হন ।
- প্রতিদিন কমপক্ষে 6 থেকে 8 ঘণ্টা ঘুমান । রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন ও সকালে ঘুম থেকে উঠুন ।
- যতদূর সম্ভব, অতিরিক্ত চাপ থেকে দূরে থাকুন ।
- আপনার নিয়মিত রুটিনে মুখের ব্যায়াম করুন ।
- আপনার ত্বকের প্রকৃতি অনুযায়ী নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিন ৷ যেমন নিয়মিত বিরতিতে ত্বককে এক্সফোলিয়েট করা ও প্রতিদিন একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার দিয়ে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করা ।
- মাসে অন্তত একবার সঠিকভাবে ত্বকের মাসাজ বা ফেসিয়াল করুন ।
- ত্বকে বেশিক্ষণ মেকআপ রাখা এড়িয়ে চলুন । বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে মেকআপ তুলে ফেলুন ।
- এছাড়া ত্বকের নিয়মিত ক্লিনজিং ও টোনিংও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
আরও পড়ুন: