ETV Bharat / entertainment

'সঙ্গীত হল একমাত্র মাধ্যম যেটা বিমূর্ত...' মত গৌতম ঘোষের, বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে কী বললেন রথীজিৎ-অনীক ? - WORLD MUSIC DAY 2025

বিশেষ দিনে সঙ্গীত নিয়ে নানা কথায় মুখর চলচ্চিত্র পরিচালক থেকে সুরকার, গায়ক-অভিনেতা।

World Music Day
বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে কী বলছেন টলিউডের শিল্পীরা (Special arrangement)
author img

By ETV Bharat Entertainment Team

Published : June 21, 2025 at 10:42 AM IST

4 Min Read

কলকাতা, 21 জুন: প্রত্যেক বছর এই দিনটা উদযাপিত হয় 'ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে' (World Music Day 2025) বা 'বিশ্ব সঙ্গীত দিবস' হিসাবে। কথায় বলে, সুরই সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা...। সেই সুরের জন্য বরাদ্দ করা একটা নির্দিষ্ট দিন। 1982 সালে ফরাসি মন্ত্রী জ্যাক ল্যাং সর্বপ্রথম 'বিশ্ব সঙ্গীত দিবস' পালনের প্রস্তাব করেন। 1985 সালের 21 জুন প্রথমে গোটা ইউরোপ এবং পরে সারা বিশ্ব এই সঙ্গীত দিবস পালন করে। এরপর থেকে দিনটি বিশ্ব সঙ্গীত দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বিশেষ দিনে ইটিভি ভারতে সঙ্গীত নিয়ে নানা কথায় মুখর চলচ্চিত্র পরিচালক থেকে সুরকার, গায়ক এবং অভিনেতা।

চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে পঞ্চাশটি বছর পার করেছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। নিজের সব ছবির মিউজিক ডিরেকশন নিজেই করেছেন। 'ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে'-তে সঙ্গীত নিয়ে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, "আজ পর্যন্ত আমি আমার সব ছবির মিউজিক কম্পোজ নিজেই করেছি। শুধু দুটো ছবি ছাড়া। স্ক্রিপ্ট ভাবার সঙ্গে সঙ্গেই আমি মিউজিক ভাবতে থাকি। কেননা সিনেমায় মিউজিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 'পরিক্রমা' ছবির মিউজিক ডিরেকশনও আমার। এই ছবির মিউজিক করার পিছনে অনেক ভাবনা চিন্তা ছিল। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং ওয়েস্টার্ন অপেরা সবই নিয়ে আসতে হয়েছে এই ছবিতে।"

বিশ্ব সঙ্গীত দিবস নিয়ে তারকাদের অভিমত (ইটিভি ভারত)

তিনি আরও বলেন, "সিনেমার মিউজিক সবসময়েই খুব সংযতভাবে করা উচিত। চিন্তাভাবনা থাকা উচিত তার মধ্যে। আজ 'ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে'। আমার মনে হয় পৃথিবীতে সঙ্গীত হল একমাত্র মিডিয়াম যেটা বিমূর্ত এবং পৃথিবীর সমস্ত মানুষের কাছে তার আবেদন রয়েছে। যে কোনও কাজে যদি ঠিকমতো সা লাগে তাহলে সেই কাজ ভালো হবে। না লাগলে সেই কাজ ভালো হবে না।"

সুরকার-সঙ্গীত শিল্পী রথীজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, "আমার জীবনের প্রত্যেকটা দিনই মিউজিক ডে। সারাদিন তো গানবাজনা নিয়েই থাকি। তবে, একটা দিন রয়েছে যেদিন সবার জন্য। সেদিন সবাই বেশি করে গান শোনে বা আলাদা করে সেলিব্রেট করে। সবাইকে একটা কথাই বলব, সবাই যেন আরও বেশি করে গান শোনে।" রথীজিৎ দীর্ঘদিন ধরে 'সারেগামাপা'র সঙ্গে যুক্ত। তাঁর কাছে সঙ্গীতের শিক্ষা নেয় আবালবৃদ্ধবনিতা। রথীজিতের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যারা গান শিখতে আসে তাদের মূলত লক্ষ্য কী?

শুধুই শেখা নাকি রিয়ালিটি শো-তে অংশ নেওয়া? তিনি বলেন, "যারা গান শেখে তাদের জন্য গানের প্রকৃত শিক্ষাটা খুব জরুরি। তাড়াহুড়োর কিছু নেই। গান শেখা শুরু করলে লক্ষ্য থাকাটাও জরুরি। আমরা লেখাপড়া শুরু করলেও বাবা মায়েরা বলেন, ডাক্তার হবি, ইঞ্জিনিয়ার হবি বা এরকম আরও কত কী হওয়ার কথা বলেন। এটা সেরকমই। অনেকে একটুখানি শিখেই তাড়াতাড়ি অডিশনে যেতে চায়। তাতে লাভ হয় না। আবার অনেকে রিয়ালিটিতে যেতেও চায় না। তারা আরও শিখতে চায়। তবে, বাঙালির রক্তে গানবাজনা আছে। বাঙালি গানবাজনা নিয়ে স্বপ্ন দেখে। বাঙালি গান গাইতে পারে।"

গানের রিয়ালিটি শো থেকেই উত্থান সঙ্গীত শিল্পী অনীক ধরের ৷ এরপর সিনেমায় অসংখ্য গান গেয়েছেন তিনি। অনীক বলেন, "আমাদের সময়ের গানের রিয়ালিটি শো'তে কোথাও একটা সারল্য, সত্যতা ছিল। যেটা আজ অনেক পরিবর্তন হয়েছে। অবশ্যই সবকিছুর পরিবর্তন হয় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। তবে, তাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে রিয়ালিটি যেন হারিয়ে না যায়। যাঁরা বানান তারা ভালো বুঝবেন।"

অভিনেতা দেবপ্রিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, "সত্যি কথা বলতে যতদিন বাবা (মৃণাল মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা-গায়ক) বেঁচে ছিলেন ততদিন আমার জন্য প্রত্যেকটা দিনই ছিল ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে৷ কেননা বাবার রেওয়াজ দিয়ে দিন শুরু হত। এখন অতটা হয় না। কিন্তু আমার জীবনে তো মিউজিকটা থেকেই গেছে। তা সে আমি স্ক্রিপ্ট পড়তে বসি বা ওয়ার্ক আউট করি, মিউজিক আমার সঙ্গে সবসময় থাকে। লিখতে বসলেও কানে হেডফোন লাগিয়ে গানটা শুনিই। ওটা ছাড়া পারব না।"

অভিনেতার কথায়, "আমার মনে হয় আমি একা নই, পৃথিবীতে সবার ভরসা গান বা মিউজিক। আমরা সবাই খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি ৷ একটার পর একটা দুঃসংবাদ আসছে। সেখানে মন স্থির রেখে টিকে থাকতে মিউজিক আমাদের মানসিকভাবে সাহায্য করে। আমার মনে হয় না মিউজিককে আলাদা করে সেলিব্রেট করতে আলাদা কোনও দিনের প্রয়োজন আছে ।"

কলকাতা, 21 জুন: প্রত্যেক বছর এই দিনটা উদযাপিত হয় 'ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে' (World Music Day 2025) বা 'বিশ্ব সঙ্গীত দিবস' হিসাবে। কথায় বলে, সুরই সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা...। সেই সুরের জন্য বরাদ্দ করা একটা নির্দিষ্ট দিন। 1982 সালে ফরাসি মন্ত্রী জ্যাক ল্যাং সর্বপ্রথম 'বিশ্ব সঙ্গীত দিবস' পালনের প্রস্তাব করেন। 1985 সালের 21 জুন প্রথমে গোটা ইউরোপ এবং পরে সারা বিশ্ব এই সঙ্গীত দিবস পালন করে। এরপর থেকে দিনটি বিশ্ব সঙ্গীত দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বিশেষ দিনে ইটিভি ভারতে সঙ্গীত নিয়ে নানা কথায় মুখর চলচ্চিত্র পরিচালক থেকে সুরকার, গায়ক এবং অভিনেতা।

চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে পঞ্চাশটি বছর পার করেছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। নিজের সব ছবির মিউজিক ডিরেকশন নিজেই করেছেন। 'ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে'-তে সঙ্গীত নিয়ে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, "আজ পর্যন্ত আমি আমার সব ছবির মিউজিক কম্পোজ নিজেই করেছি। শুধু দুটো ছবি ছাড়া। স্ক্রিপ্ট ভাবার সঙ্গে সঙ্গেই আমি মিউজিক ভাবতে থাকি। কেননা সিনেমায় মিউজিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 'পরিক্রমা' ছবির মিউজিক ডিরেকশনও আমার। এই ছবির মিউজিক করার পিছনে অনেক ভাবনা চিন্তা ছিল। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং ওয়েস্টার্ন অপেরা সবই নিয়ে আসতে হয়েছে এই ছবিতে।"

বিশ্ব সঙ্গীত দিবস নিয়ে তারকাদের অভিমত (ইটিভি ভারত)

তিনি আরও বলেন, "সিনেমার মিউজিক সবসময়েই খুব সংযতভাবে করা উচিত। চিন্তাভাবনা থাকা উচিত তার মধ্যে। আজ 'ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে'। আমার মনে হয় পৃথিবীতে সঙ্গীত হল একমাত্র মিডিয়াম যেটা বিমূর্ত এবং পৃথিবীর সমস্ত মানুষের কাছে তার আবেদন রয়েছে। যে কোনও কাজে যদি ঠিকমতো সা লাগে তাহলে সেই কাজ ভালো হবে। না লাগলে সেই কাজ ভালো হবে না।"

সুরকার-সঙ্গীত শিল্পী রথীজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, "আমার জীবনের প্রত্যেকটা দিনই মিউজিক ডে। সারাদিন তো গানবাজনা নিয়েই থাকি। তবে, একটা দিন রয়েছে যেদিন সবার জন্য। সেদিন সবাই বেশি করে গান শোনে বা আলাদা করে সেলিব্রেট করে। সবাইকে একটা কথাই বলব, সবাই যেন আরও বেশি করে গান শোনে।" রথীজিৎ দীর্ঘদিন ধরে 'সারেগামাপা'র সঙ্গে যুক্ত। তাঁর কাছে সঙ্গীতের শিক্ষা নেয় আবালবৃদ্ধবনিতা। রথীজিতের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যারা গান শিখতে আসে তাদের মূলত লক্ষ্য কী?

শুধুই শেখা নাকি রিয়ালিটি শো-তে অংশ নেওয়া? তিনি বলেন, "যারা গান শেখে তাদের জন্য গানের প্রকৃত শিক্ষাটা খুব জরুরি। তাড়াহুড়োর কিছু নেই। গান শেখা শুরু করলে লক্ষ্য থাকাটাও জরুরি। আমরা লেখাপড়া শুরু করলেও বাবা মায়েরা বলেন, ডাক্তার হবি, ইঞ্জিনিয়ার হবি বা এরকম আরও কত কী হওয়ার কথা বলেন। এটা সেরকমই। অনেকে একটুখানি শিখেই তাড়াতাড়ি অডিশনে যেতে চায়। তাতে লাভ হয় না। আবার অনেকে রিয়ালিটিতে যেতেও চায় না। তারা আরও শিখতে চায়। তবে, বাঙালির রক্তে গানবাজনা আছে। বাঙালি গানবাজনা নিয়ে স্বপ্ন দেখে। বাঙালি গান গাইতে পারে।"

গানের রিয়ালিটি শো থেকেই উত্থান সঙ্গীত শিল্পী অনীক ধরের ৷ এরপর সিনেমায় অসংখ্য গান গেয়েছেন তিনি। অনীক বলেন, "আমাদের সময়ের গানের রিয়ালিটি শো'তে কোথাও একটা সারল্য, সত্যতা ছিল। যেটা আজ অনেক পরিবর্তন হয়েছে। অবশ্যই সবকিছুর পরিবর্তন হয় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। তবে, তাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে রিয়ালিটি যেন হারিয়ে না যায়। যাঁরা বানান তারা ভালো বুঝবেন।"

অভিনেতা দেবপ্রিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, "সত্যি কথা বলতে যতদিন বাবা (মৃণাল মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা-গায়ক) বেঁচে ছিলেন ততদিন আমার জন্য প্রত্যেকটা দিনই ছিল ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে৷ কেননা বাবার রেওয়াজ দিয়ে দিন শুরু হত। এখন অতটা হয় না। কিন্তু আমার জীবনে তো মিউজিকটা থেকেই গেছে। তা সে আমি স্ক্রিপ্ট পড়তে বসি বা ওয়ার্ক আউট করি, মিউজিক আমার সঙ্গে সবসময় থাকে। লিখতে বসলেও কানে হেডফোন লাগিয়ে গানটা শুনিই। ওটা ছাড়া পারব না।"

অভিনেতার কথায়, "আমার মনে হয় আমি একা নই, পৃথিবীতে সবার ভরসা গান বা মিউজিক। আমরা সবাই খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি ৷ একটার পর একটা দুঃসংবাদ আসছে। সেখানে মন স্থির রেখে টিকে থাকতে মিউজিক আমাদের মানসিকভাবে সাহায্য করে। আমার মনে হয় না মিউজিককে আলাদা করে সেলিব্রেট করতে আলাদা কোনও দিনের প্রয়োজন আছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.