কলকাতা, 8 এপ্রিল: ঠাকুরপুকুর বাজার ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তি চায় টলিপাড়া। পরিচালক ভিক্টোর মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ছয়জনকে জখম করা আর একজনকে মেরে ফেলার শাস্তি চায় টলিপাড়া। 'আমলকী' ধারাবাহিকে ভিক্টো অভিনয় করেছিলেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের ছোট ভাইয়ের চরিত্রে ৷
তাঁর এই অপরাধের ব্যাপারে ভাস্বর বলেন, "ভিক্টো যেটা করেছে সেটা অপরাধ। ওর সঙ্গে আমি কাজ করেছি। ভালো কাজও করে। আমি দীর্ঘদিন চিনি ওকে। কখনোই নড়বড়ে, অসভ্য, অভদ্র বলে মনে হয়নি। খুব যে নেশা করত এমনটাও দেখিনি। সেই লোকটার এমন পরিবর্তন তো আমি ভাবতেই পারছি না। এত দূর অধঃপতন! ভিক্টো গাড়িটা চালিয়েছে, দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে, একটা মানুষকে মেরে ফেলেছে। ওর তো শাস্তি হবেই। তবে ওর সঙ্গে যারা ওই গাড়িতে ছিল তারাও ক্রিমিনাল। ওদেরও গ্রেফতার করা উচিত। ওরা কেন চালাতে দিল ভিক্টোকে গাড়িটা? কেন বলল না, তুমি চালিও না। কেন তারা একজন ড্রাইভারকে নিল না? নির্বোধ? নাকি নেশা করে করে এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে যে মাথাটাই কাজ করছে না?"
ভাস্বর আরও বলেন, "মানুষ মারা এবং নেশা করে গাড়ি চালানো দুইই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বারবার আমাদের সরকার থেকে বলা হয় যে 'ড্রিঙ্ক অ্যান্ড ড্রাইভ' অপরাধ। আর তার জন্য পেনাল্টি হিসেবে যা যা দেওয়ার মানে জেল পর্যন্ত হতে পারে। এটা জানার পরেও শোনার পরেও এতদূর ঘটনা ঘটল শহরে ! আমার একটাই বক্তব্য যে, হোল নাইট পার্টি, মাথা অবধি মদ খেয়ে তারা সকালবেলা বেরলোই যখন তারা একটা ড্রাইভার কেন নিল না? যখন আগের দিন নেশা করতে যাচ্ছে তখন তো জানত যে নেশা করতেই যাচ্ছি, ভজন বা কীর্তন গাইতে যাচ্ছি না। আর যে অবস্থায় ওদের দেখা যাচ্ছে সেটা রাতের নেশা নয়। রাতের নেশা হলে সকালে কারওকে এতটা বেসামাল হতে দেখা যেত না। বোঝাই যাচ্ছে ভোর বেলা অবধি নেশা করা হয়েছে।"
অভিনেতা বলেন, "আমি আরও অবাক যে লোকটার জান গেল তার দায় কে নেবে? ইন্ডাস্ট্রি? নিরীহ মানুষ বাজার করতে এলো আর প্রাণ চলে গেল। ইন্ডাস্ট্রির অপমান হল, কী হবে ইন্ডাস্ট্রির এসব নিয়ে কথা বলছি। কেউ তো লোকটার কথা জিজ্ঞেস করছে না। লোকটা কি একমাত্র রোজগেরে মানুষ পরিবারের? নাকি তাঁকে সাহায্য করার মতো কেউ আছে। কোথাও কথা হচ্ছে না তো সেটা নিয়ে।" মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, "অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা করি। তবে, শুধু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতেই নয় চারদিকে তাকালেই এই ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। খুবই উদ্বেগজনক।"
সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং শাস্তির আর্জি জানিয়েছেন টলিপাড়ার একাংশ। নিজের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে সুদীপ্তা চক্রবর্তী লিখেছেন, "খুনের দায়ে অভিযুক্ত এই মদ্যপ গাড়িচালক পরিচালককে আমি চিনি না। আজকের আগে কোনওদিন নামও শুনিনি। কিন্তু ঘটনাটা সম্পর্কে জানার পর থেকে গা রি রি করছে। লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে ভেবে যে ইনি আমারই কর্মক্ষেত্রের আরেক কর্মী। নেশায় প্রায় অবচেতন যে মেয়েটি ওই গাড়িতেই ছিলেন, তার মুখ চিনি। লজ্জা করলো দেখে। খুব লজ্জা করলো। অসহায় লাগছে। সমস্ত অন্যায়কারী ও তার সহযোগীরা চরম শাস্তি পাক। যার গেলো, যারা গেলো, তারা সঠিক বিচার পাক।" ইতিমধ্যেই অপরাধী পরিচালক ভিক্টো তথা সিদ্ধান্ত দাসকে আলিপুর আদালত 10 দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ৷