নয়াদিল্লি, 9 এপ্রিল: ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ভারতের সম্পর্কে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য ও মনোভাবের কি বিরূপ প্রভাব পড়ল পদ্মাপাড়ের বাণিজ্যে ?
দিল্লির এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয় বন্দর, বিমানবন্দর বা পরিবহণ ব্যবস্থার সাহায্যে অন্যান্য দেশে বাণিজ্য চালানোর অনুমতি তুলে নেওয়া হল বাংলাদেশের থেকে । যেমন, কলকাতা বন্দর বা মুম্বই বন্দর হয়ে ইউরোপে, আমেরিকা বা আফ্রিকায় বাংলাদেশি পণ্য পাঠানো হতো। পাশাপাশি, চেন্নাই বিমানবন্দর থেকেও কিছু বিভাগের বাংলাদেশি পণ্য অন্যান্য দেশে আশাকপথে রফতানি করা হতো।
#WATCH | Delhi | On the withdrawal of the Transshipment facility for Bangladesh, MEA Spokesperson Randhir Jaiswal says, " ...the transshipment facility extended to bangladesh had over a period of time resulted in significant congestion at our airports and ports. logistical delays… pic.twitter.com/ZoLBJrskZ8
— ANI (@ANI) April 9, 2025
8 এপ্রিল থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে:
এই সিদ্ধান্ত 8 এপ্রিল থেকেই কার্যকর হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক (MEA) স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধার ফলে ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দরগুলিতে অতিরিক্ত যানজট, লজিস্টিক বিলম্ব এবং খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে ভারতের নিজস্ব রফতানি প্রভাবিত হচ্ছে। ভারত স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র ভারতীয় বন্দর, বিমানবন্দর দিয়ে তৃতীয় দেশে যাওয়া ট্রান্স-শিপমেন্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। কিন্তু, ভারতীয় ভূখণ্ড দিয়ে বাংলাদেশ থেকে নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ নেই।
8 এপ্রিলের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (সিবিআইসি)-এর সার্কুলারে বলা হয়েছে, "29 জুন, 2020 তারিখের সংশোধিত সার্কুলারটি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা পণ্যসম্ভারগুলিকে সেই সার্কুলারে প্রদত্ত পদ্ধতি অনুযায়ী ভারতীয় অঞ্চল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।"
এই সিদ্ধান্তের কী কী প্রভাব পড়বে?
ভারতের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে চলেছে। পণ্য পরিবহণের জন্য বাংলাদেশকে এখন চট্টগ্রাম বা মংলা বন্দরের উপর নির্ভর করতে হবে। এর ফলে লজিস্টিক খরচ এবং শিপিং সময় বাড়তে পারে। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি রফতানিকারকরা বিশেষ সমস্যার সম্মুখীন হবেন।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত পোশাক, জুতো এবং রত্ন ও গহনার মতো বেশ কয়েকটি ভারতীয় রফতানি খাতকে সহায়তা করবে। বস্ত্র খাতে বাংলাদেশ ভারতের একটি বড় প্রতিযোগী। ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনস (FIEO)-এর ডিরেক্টর অজয় সহায় বলেন, “এখন আমাদের পণ্য পরিবহণের জন্য আরও বেশি বিমান থাকবে। এর আগে, বাংলাদেশকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার কারণে রফতানিকারকরা কম জায়গার অভিযোগ করেছিলেন।"
গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, “এই সুবিধা প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশের রফতানি ও আমদানি সরবরাহ ব্যাহত হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা তৃতীয় দেশের বাণিজ্যের জন্য ভারতীয় পরিকাঠামোর উপর নির্ভরশীল।"