বেজিং, 12 এপ্রিল: আমেরিকা-চিন 'শুল্ক যুদ্ধ' থামার নামই নেই ৷ ফের মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধি করল চিন ৷ আগে শুল্ক বাড়িয়ে 84 শতাংশ করেছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ৷ তারপরে আমেরিকা শুক্ল বৃদ্ধি করতে ফের চিনও পালটা দিল ৷ শনিবার থেকে আমেরিকার পণ্যের উপর 84 থেকে শুল্ক বাড়িয়ে 125 শতাংশ করেছে জিনপিং সরকার ৷
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অন্যান্য দেশের শুল্ক আরোপের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন ৷ কিন্তু চিনের উপর তিনি শুল্ক বৃদ্ধি কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ এরপরেই দুই দেশ 'বাণিজ্য যুদ্ধ' লিপ্ত হয়েছে ৷ দিন দিন সেই লড়াই আরও তীব্র হচ্ছে । চিনের তরফে বলা হয়েছে যে, তারা পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে আমেরিকান শুল্কের বিরুদ্ধে লড়াই করবে ৷ ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলিকে অর্থনৈতিক হুমকি বলে অভিহিত করেছে চিন ৷ যার ফলে ট্রাম্প এই সপ্তাহে ক্রমাগত শুল্ক বৃদ্ধি করে চিনের উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন ৷
চিনের উপর ট্রাম্প সর্বজনীন মোট 145 শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে ট্রাম্প সরকার । গত বুধবার যখন ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে 125 শতাংশ শুল্ক চিনের উপর চাপানো হচ্ছে, তখন তিনি ফেন্টানাইল উৎপাদনে চিনের ভূমিকার সঙ্গে সম্পর্কিত 20 শতাংশ শুল্কের কথা সেখানে অন্তর্ভুক্ত করেননি। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ফলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন ৷ এর ফলে বিশ্ব বাজারে মন্দার সম্মুখীন হতে পারে আমেরিকাকে ৷
নতুন শুল্ক ঘোষণা করে এক বিবৃতিতে চিনের অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, "চিনের উপর অস্বাভাবিকভাবে শুল্ক বৃদ্ধি করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংখ্যার খেলায় পরিণত হয়েছে ৷ বাস্তবে যার কোনও অর্থনৈতিক তাৎপর্য নেই এবং এটি বিশ্ব অর্থনীতির ইতিহাসে একটি রসিকতা হয়ে উঠবে ৷ তবে যদি আমেরিকা চিনের স্বার্থের উপর উল্লেখযোগ্যভাবে লঙ্ঘন চালিয়ে যাওয়ার উপর জোর দেয়, তাহলে চিন দৃঢ়ভাবে এর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে ।"
চিনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা মার্কিন শুল্কের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছে আরেকটি মামলা দায়ের করছে । গত সপ্তাহে বেজিং কিছু আমেরিকান কোম্পানি থেকে জোয়ার, হাঁস-মুরগি এবং মাংস আমদানি স্থগিত করেছে এবং বিভিন্ন প্রযুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিরল মাটির খনিজ পদার্থের উপর আরও রফতানি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে ৷ কয়েক ডজন আমেরিকান কোম্পানিকে এমন তালিকায় রেখেছে, যা চিনা কোম্পানিগুলিকে তাদের দ্বৈত-ব্যবহারের পণ্য বিক্রি করতে বাধা দেবে ।
দুই দেশের অর্থনীতির আকার বিবেচনা করে এই শুল্ক যুদ্ধে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা । ডব্লিউটিও'র প্রধান এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালা এই সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন যে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে ।