হায়দরাবাদ, 20 মার্চ: সেল এবং জিন থেরাপি ক্রমশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এবার এই চিকিৎসা পদ্ধতির ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনল ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। দেশের মধ্যে এই প্রথম ভার্টিক্যালি ইন্টিগ্রেটেড এবং নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানে তৈরি সেল এবং জিন থেরাপি নিয়ে এলো ভারত বায়োটেক। হায়দরাবাদের জিনম ভ্যালিতে তাদের সংস্থায় এই থেরাপির উদ্বোধন হল বৃহস্পতিবার।
সংস্থার তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "এই নতুন সৃষ্টি সেল এবং জিন থেরাপির ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে। রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে থেরাপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তাছাড়া শরীরের বিভিন্ন কোষ যাতে দীর্ঘদিন ভালো থাকে সেই ব্যবস্থাও করবে। পাশাপাশি, ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তেও রোগীকে সাহায্য করবে এই থেরাপি। কাজে দেবে হিমোফিলিয়ার মতো রোগেও।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 50 হাজার বর্গফুটের মতো বিরাট এলাকা নিয়ে তৈরি ভারত বায়োটেকের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য মানুষের প্রাণ বাঁচানো যায় এমন ওষুধ তৈরি করা। রক্তকণিকার সমস্যা থেকে শুরু করে শরীরে রক্ত তৈরি হওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিল ও প্রাণঘাতী রোগের সম্পূর্ণ নিরাময়ে কীভাবে হতে পারে তা নিয়ে চর্চা চলছে দীর্ঘদিন ধরে।
সংস্থার এগজিকিউটিভ চেয়ারম্যান কৃষ্ণ এলা বলেন, "জিন এবং কোষ থেরাপি একটি জটিল প্রক্রিয়া। জিন সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট ও বিশেষ গবেষণা উৎকর্ষ-উৎপাদন ক্ষমতার দক্ষতা প্রয়োজন এ ক্ষেত্রে।" তিনি আরও জানান, নানা ধরনের ভ্যাকসিন উৎপাদনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ভারত বায়োটেক এই ধরনের জটিল পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, উৎপাদন যে উচ্চতায় পৌঁছতে পারলে তবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মতো দরকারি ধাপ অতিক্রম করা সম্ভব সেই পরিকাঠামোও আছে ভারত বায়োটেকের। এগজিকিউটিভ চেয়ারম্যান আরও জানান, ভারত বায়োটেক দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ রোগের জন্য ভ্যাকসিন তৈরি করে আসছে। এই নতুন থেরাপি সেই কাজকে আরও বেশ খানিকটা এগিয়ে দিল।
ভারত বায়োটেকের চিফ ডেভলেপমেন্ট অফিসার রাসেল এলা বলেন, "শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল এই থেরাপিকে সমাজের সমস্ত ধরনের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। তার কারণ, এতদিন এই সমস্ত চিকিৎসার খরচ ছিল বিরাট। তাছাড়া শুধুমাত্র উন্নত দেশেই পাওয়া যেত। কিন্তু এখন আর তা হবে না। ক্যানসার থেকে শুরু করে রক্তের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা হবে এই থেরাপির সাহায্যে। এর পাশাপাশি এই ধরনের আরও নানা রোগেরও চিকিৎসা করা সম্ভব হবে। "
ম্য়াডিসনের উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কৃশানু সাহা বলেন, "গোটা পৃথিবীতেই এখন এ নিয়ে গবেষণা চলছে। অন্য কয়েকটি প্রযুক্তির পাশাপাশি এআই ব্যবহার করে কোষ থেরাপি তৈরির জন্য ভারত বায়োটেকের সঙ্গে আমরা একটি যৌথ গবেষণা শুরু করেছি। থেরাপিটি যেভাবে তৈরি করা হয়েছে এবং তাতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার হয়েছে তা বিশ্বমানের। "
কোন পথে সাফল্য ?
- বিশেষজ্ঞদের সাহায্য : বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানীরা নানাভাবে ভারত বায়োটেককে সাহায্য করেন। যা সাফল্যের একটা বড় কারণ।
- উৎপাদনের বিশেষত্ব: ভারত বায়োটেকের উৎপাদনের ক্ষমতা বিশ্বমানের ।
- গুণমানে বিশেষ নজর: উৎপাদিত সামগ্রীর উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়া হয়। তার ফলে মান নিয়ে কোনও সংশয় থাকে না।
- পরিকাঠামো: পরিকাঠামোর দিক থেকে ভারত বায়োটেক অনেকের থেকে অনেকটা এগিয়ে আছে।