ETV Bharat / bharat

বিয়ের 15 দিনের মাথায় গয়না বেচে 'সুপারি' দিয়ে স্বামীকে খুন, সঙ্গ দিল 'প্রেমিক' - AURAIYA MURDER CASE

স্বামীকে পথ থেকে সরিয়ে দিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে তাঁর কোটি টাকার সম্পত্তি হাতাতে চেয়েছিলেন মহিলা ৷ ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।

Auraiya murder case
বিয়ের 15 দিনের মাথায় স্বামীকে খুন মহিলার (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : March 25, 2025 at 1:46 PM IST

Updated : March 25, 2025 at 1:58 PM IST

4 Min Read

অউরাইয়া(উত্তরপ্রদেশ), 25 মার্চ: মেরঠ হত্যাকাণ্ডের ছায়া অউরাইয়াতে ৷ মুসকানের মতো ‘পথের কাঁটা’ সরাতে প্রেমিকের সঙ্গে স্বামীকে খুনের ষড়যন্ত্র ৷ বিয়ের 15 দিনের মাথায় 'ভাড়াটে খুনি' দিয়ে স্বামীকে খুন করায় প্রগতি ৷

এই কাজের জন্য বিয়েতে উপহার হিসেবে পাওয়া গয়না বেচে এক লক্ষ টাকা 'সুপারি কিলার' ভাড়া করতে প্রেমিকের হাতে তুলে দেয় প্রগতি যাদব ৷ স্বামী কোথায় রয়েছে, সেই অবস্থানও ভাড়াটে খুনিদের নিয়মিত দিত তরুণী ৷ সুযোগ বুঝে দিলীপ যাদবকে মাথায় গুলি করে হত্যা করে ভাড়াটে খুনিরা ৷

সুপারি কিলার দিয়ে খুন করানো হয় দিলীপ যাদবকে (ইটিভি ভারত)

অউরাইয়া খুন-কাণ্ডে অভিযুক্ত তরুণী প্রগতি যাদবকে সোমবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ প্রেমিক অনুরাগ যাদব ওরফে বাবলু এবং সুপারি কিলার রামজি নাগরকেও পাকড়াও করা হয়েছে ৷ অউরাইয়া'র এসপি অভিজিৎ আর শঙ্কর বলেন, "এই খুনের সঙ্গে জড়িত সকল অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ৷ ষড়যন্ত্রে অন্যদের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ তাদের তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে ৷ ধৃতদের কাছ থেকে 315 বোরের দু'টি পিস্তল, চারটি কার্তুজ ছাড়াও অপরাধে ব্যবহৃত বাইকটি উদ্ধার করা হয়েছে।"

ময়নপুরীর ভোগাঁও থানা এলাকার নাগলা দীপা গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ যাদব ৷ 5 মার্চ তাঁর বিয়ে হয় অউরাইয়ার ফাফুন্ড এলাকার সিহাপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রগতি যাদবের সঙ্গে । দিলীপ অউরাইয়ার দিবিয়াপুর এলাকায় থাকতেন । এসএস যাদব ক্রেন সার্ভিস নামে তাঁর একটি দোকান ছিল ৷ তিনি কনৌজে হাইড্রা ক্রেনের কাজ করতেন ৷ 19 মার্চ তিনি কাজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন । সেই সময় সাহার থানা এলাকার একটি হোটেলে ছিলেন ৷ এসময় কয়েকজন বাইক আরোহী যুবক সেখানে পৌঁছয় । হাইড্রার সাহায্যে খাদে পড়ে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করার অজুহাতে তারা দিলীপকে বাইকে করে নির্জন জায়াগায় নিয়ে যায় ৷

Auraiya murder case
5 মার্চ বিয়ে হয় দিলীপ ও প্রগতি যাদবের (ইটিভি ভারত)

হোটেল থেকে প্রায় 7 কিলোমিটার দূরে অউরাইয়া জেলার পালিয়া গ্রামের কাছে দিলীপকে গুরুতর জখম অবস্থায় পাওয়া যায় । রক্তে ভিজে যাচ্ছিল তাঁর সারা শরীর । পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে । চিকিৎসাধীন অবস্থায় 21 মার্চ দিলীপের মৃত্যু হয় । ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, তাঁর মাথায় 315 বোরের পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়েছে ।

অউরাইয়ার এসপি জানিয়েছেন, ঘটনার পর দিলীপের পরিবার অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে। তদন্তে নেমে পুলিশ ঘটনাস্থলের সাত কিলোমিটার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে । তাতে দিলীপকে বাইক আরোহীদের সঙ্গে যেতে দেখা যায় ৷ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুই যুবককে শনাক্ত করে পুলিশ । এরপরে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রামজি নগর ও অনুরাগ ওরফে বাবলু যাদবকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ তাঁদের মোবাইলের তথ্য থেকে তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷

পুলিশ জানিয়েছে, অনুরাগ ও প্রগতির মধ্যে গত 4 বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল । প্রেমিক অনুরাগকে বিয়ে করতে চেয়েছিল প্রগতি ৷ কিন্তু বাধ সাধে পরিবার ৷ পরিবার জোর করে দিলীপের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়ে দেয় ৷ কিন্তু বিয়ের পরই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে দিলীপকে খুনের ষড়যন্ত্র করে প্রগতি ৷ দিলীপকে পথ থেকে সরিয়ে তাঁর কোটি টাকার সম্পত্তি ভোগ করতে চেয়েছিল প্রগতি ও অনুরাগ ৷ এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সেই চ্যাট খুঁজে পেয়েছে, যাতে অনুরাগ ও প্রগতি দু'জনে দিলীপকে খুনের কথা বলেছিল ৷ পুলিশ জানিয়েছে, বিয়েতে খুশি ছিল না প্রগতি । তাই বিয়েতে উপহার হিসাবে পাওয়া টাকা ও গয়না বেচে এক লাখ টাকা সংগ্রহ করে । এরপর সেই টাকা অনুরাগকে দেয় প্রগতি ৷ দিলীপকে হত্যার জন্য রামজি নগরকে 2 লাখ টাকা দিয়ে ভাড়া দেয় অনুরাগ ৷ হত্যার আগে এক লাখ টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল তাকে ৷ বাকি টাকা পরে দেওয়ার কথা ছিল।

Auraiya murder case
ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার জিনিসপত্র (ছবি সূত্র -পুলিশ)

পুলিশ জানিয়েছে, স্বামীকে খুন করার জন্য প্রগতি এতটাই উদ্যত ছিল যে, ক্রমাগত অভিযুক্তদের কাছে দিলীপের লোকেশন পাঠাতে থাকে ৷ যাতে সহজেই দিলীপের কাছে পৌঁছতে পারে অভিযুক্তরা ৷ এরপর কোনও এক অজুহাতে তাঁকে বাম্বার কাছে নিয়ে গিয়ে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় ৷ ঘটনার সময় প্রগতি বাপের বাড়িতে ছিল ৷ কিন্তু, স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে লোকজনের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ি পৌঁছয় । সেখান থেকে প্রগতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

উল্লেখ্য, মেরঠ হত্যাকাণ্ডে উত্তাল উত্তরপ্রদেশ ৷ অভিযোগ, প্রেমিক সাহিলের সঙ্গে মিলে মার্চেন্ট নেভি অফিসার স্বামী সৌরভ রাজপুতকে খুন করে মুসকান ৷ 3 মার্চ রাতে ওই ঘটনা ঘটে । সৌরভের খাবারে ওষুধ মিশিয়ে তাঁকে অচেতন করে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় সৌরভকে ৷ দেহ 15 টুকরো করে একটি ড্রামে ভরে সিমেন্ট ঢেলে প্ল্যাস্টার করে দেওয়া হয় ৷ 18 মার্চ পুলিশ অভিযুক্ত মুসকান ও সাহিলকে গ্রেফতার করে ।

অউরাইয়া(উত্তরপ্রদেশ), 25 মার্চ: মেরঠ হত্যাকাণ্ডের ছায়া অউরাইয়াতে ৷ মুসকানের মতো ‘পথের কাঁটা’ সরাতে প্রেমিকের সঙ্গে স্বামীকে খুনের ষড়যন্ত্র ৷ বিয়ের 15 দিনের মাথায় 'ভাড়াটে খুনি' দিয়ে স্বামীকে খুন করায় প্রগতি ৷

এই কাজের জন্য বিয়েতে উপহার হিসেবে পাওয়া গয়না বেচে এক লক্ষ টাকা 'সুপারি কিলার' ভাড়া করতে প্রেমিকের হাতে তুলে দেয় প্রগতি যাদব ৷ স্বামী কোথায় রয়েছে, সেই অবস্থানও ভাড়াটে খুনিদের নিয়মিত দিত তরুণী ৷ সুযোগ বুঝে দিলীপ যাদবকে মাথায় গুলি করে হত্যা করে ভাড়াটে খুনিরা ৷

সুপারি কিলার দিয়ে খুন করানো হয় দিলীপ যাদবকে (ইটিভি ভারত)

অউরাইয়া খুন-কাণ্ডে অভিযুক্ত তরুণী প্রগতি যাদবকে সোমবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ প্রেমিক অনুরাগ যাদব ওরফে বাবলু এবং সুপারি কিলার রামজি নাগরকেও পাকড়াও করা হয়েছে ৷ অউরাইয়া'র এসপি অভিজিৎ আর শঙ্কর বলেন, "এই খুনের সঙ্গে জড়িত সকল অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ৷ ষড়যন্ত্রে অন্যদের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ তাদের তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে ৷ ধৃতদের কাছ থেকে 315 বোরের দু'টি পিস্তল, চারটি কার্তুজ ছাড়াও অপরাধে ব্যবহৃত বাইকটি উদ্ধার করা হয়েছে।"

ময়নপুরীর ভোগাঁও থানা এলাকার নাগলা দীপা গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ যাদব ৷ 5 মার্চ তাঁর বিয়ে হয় অউরাইয়ার ফাফুন্ড এলাকার সিহাপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রগতি যাদবের সঙ্গে । দিলীপ অউরাইয়ার দিবিয়াপুর এলাকায় থাকতেন । এসএস যাদব ক্রেন সার্ভিস নামে তাঁর একটি দোকান ছিল ৷ তিনি কনৌজে হাইড্রা ক্রেনের কাজ করতেন ৷ 19 মার্চ তিনি কাজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন । সেই সময় সাহার থানা এলাকার একটি হোটেলে ছিলেন ৷ এসময় কয়েকজন বাইক আরোহী যুবক সেখানে পৌঁছয় । হাইড্রার সাহায্যে খাদে পড়ে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করার অজুহাতে তারা দিলীপকে বাইকে করে নির্জন জায়াগায় নিয়ে যায় ৷

Auraiya murder case
5 মার্চ বিয়ে হয় দিলীপ ও প্রগতি যাদবের (ইটিভি ভারত)

হোটেল থেকে প্রায় 7 কিলোমিটার দূরে অউরাইয়া জেলার পালিয়া গ্রামের কাছে দিলীপকে গুরুতর জখম অবস্থায় পাওয়া যায় । রক্তে ভিজে যাচ্ছিল তাঁর সারা শরীর । পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে । চিকিৎসাধীন অবস্থায় 21 মার্চ দিলীপের মৃত্যু হয় । ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, তাঁর মাথায় 315 বোরের পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়েছে ।

অউরাইয়ার এসপি জানিয়েছেন, ঘটনার পর দিলীপের পরিবার অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে। তদন্তে নেমে পুলিশ ঘটনাস্থলের সাত কিলোমিটার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে । তাতে দিলীপকে বাইক আরোহীদের সঙ্গে যেতে দেখা যায় ৷ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুই যুবককে শনাক্ত করে পুলিশ । এরপরে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রামজি নগর ও অনুরাগ ওরফে বাবলু যাদবকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ তাঁদের মোবাইলের তথ্য থেকে তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷

পুলিশ জানিয়েছে, অনুরাগ ও প্রগতির মধ্যে গত 4 বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল । প্রেমিক অনুরাগকে বিয়ে করতে চেয়েছিল প্রগতি ৷ কিন্তু বাধ সাধে পরিবার ৷ পরিবার জোর করে দিলীপের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়ে দেয় ৷ কিন্তু বিয়ের পরই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে দিলীপকে খুনের ষড়যন্ত্র করে প্রগতি ৷ দিলীপকে পথ থেকে সরিয়ে তাঁর কোটি টাকার সম্পত্তি ভোগ করতে চেয়েছিল প্রগতি ও অনুরাগ ৷ এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সেই চ্যাট খুঁজে পেয়েছে, যাতে অনুরাগ ও প্রগতি দু'জনে দিলীপকে খুনের কথা বলেছিল ৷ পুলিশ জানিয়েছে, বিয়েতে খুশি ছিল না প্রগতি । তাই বিয়েতে উপহার হিসাবে পাওয়া টাকা ও গয়না বেচে এক লাখ টাকা সংগ্রহ করে । এরপর সেই টাকা অনুরাগকে দেয় প্রগতি ৷ দিলীপকে হত্যার জন্য রামজি নগরকে 2 লাখ টাকা দিয়ে ভাড়া দেয় অনুরাগ ৷ হত্যার আগে এক লাখ টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল তাকে ৷ বাকি টাকা পরে দেওয়ার কথা ছিল।

Auraiya murder case
ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার জিনিসপত্র (ছবি সূত্র -পুলিশ)

পুলিশ জানিয়েছে, স্বামীকে খুন করার জন্য প্রগতি এতটাই উদ্যত ছিল যে, ক্রমাগত অভিযুক্তদের কাছে দিলীপের লোকেশন পাঠাতে থাকে ৷ যাতে সহজেই দিলীপের কাছে পৌঁছতে পারে অভিযুক্তরা ৷ এরপর কোনও এক অজুহাতে তাঁকে বাম্বার কাছে নিয়ে গিয়ে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় ৷ ঘটনার সময় প্রগতি বাপের বাড়িতে ছিল ৷ কিন্তু, স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে লোকজনের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ি পৌঁছয় । সেখান থেকে প্রগতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

উল্লেখ্য, মেরঠ হত্যাকাণ্ডে উত্তাল উত্তরপ্রদেশ ৷ অভিযোগ, প্রেমিক সাহিলের সঙ্গে মিলে মার্চেন্ট নেভি অফিসার স্বামী সৌরভ রাজপুতকে খুন করে মুসকান ৷ 3 মার্চ রাতে ওই ঘটনা ঘটে । সৌরভের খাবারে ওষুধ মিশিয়ে তাঁকে অচেতন করে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় সৌরভকে ৷ দেহ 15 টুকরো করে একটি ড্রামে ভরে সিমেন্ট ঢেলে প্ল্যাস্টার করে দেওয়া হয় ৷ 18 মার্চ পুলিশ অভিযুক্ত মুসকান ও সাহিলকে গ্রেফতার করে ।

Last Updated : March 25, 2025 at 1:58 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.