শ্রীনগর, 22 এপ্রিল: জঙ্গিরা যখন পহেলগাঁওয়ে এসে পৌঁছায়, তখন সন্তোষ জগদালের পরিবার তাঁবুর ভেতরে ভয়ে কাতরাচ্ছিল। জঙ্গিরা 54 বছর বয়সী সন্তোষ জগদালেকে বেরিয়ে এসে একটি ইসলামিক আয়াত পাঠ করতে বলে। সন্তোষ তা না পারায় পারেনি, তখন সন্ত্রাসীরা তাঁকে মোট তিনটি গুলি করে: একবার মাথায়, তারপর কানের পিছনে এবং তারপর তার পিঠে। পুনের ওই ব্যবসায়ীর 26 বছর বয়সী মেয়ে মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ হামলায় পরিবারটি যে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে গিয়েছে, তার বর্ণনা দিতে গিয়ে এ কথা জানিয়েছে। তার বাবাকে খুন করার পর বন্দুকধারীরা তার পাশে শুয়ে থাকা তার কাকার উপর আক্রমণ করে এবং তাকে পিঠে বেশ কয়েকবার গুলি করে।
জঙ্গি হামলায় নিহত ব্যবসায়ীর 26 বছর বয়সী মেয়ে আশাভরি জগদালে হামলার পাঁচ ঘণ্টা পর সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, "আমরা পাঁচ জনের একটি দল ছিলাম, যার মধ্যে আমার বাবা-মাও ছিলেন। আমরা পাহেলগামের কাছে বৈসরান উপত্যকায় ছিলাম এবং যখন গুলি শুরু হয়েছিল তখন মিনি সুইজারল্যান্ড নামের একটি জায়গায় ছিলাম।"
আশাভরি জগদালে বলেন, "হামলা হতেই আমরা কাছের একটি তাঁবুতে আত্মরক্ষার জন্য ছুটে যাই। আরও ছয় থেকে সাতজনও (পর্যটক) সেখানে হাজির হয়। সন্ত্রাসবাদী এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের মধ্যে গুলির লড়াইয়ের আশঙ্কায় আমরা সবাই মাটিতে শুয়ে পড়ি। জঙ্গিদের একটি দল প্রথমে কাছের একটি তাঁবুতে এসে গুলি চালায়। তারপর তারা আমাদের তাঁবুতে এসে আমার বাবাকে বেরিয়ে আসতে বলে।"
আশাভরি বলতে থাকেন, "ওরা মোদিকে তিরস্কার করছিল । তারপর তারা আমার বাবাকে একটি ইসলামি আয়াত (সম্ভবত কলমা) পাঠ করতে বলে। বাবা তা করতে না পারায় তারা বাবাকে তিনটি গুলি করে, একটি মাথায়, একটি কানের পিছনে এবং একটি পিঠে। আমার কাকা আমার পাশেই ছিলেন। সন্ত্রাসীরা তাঁকে লক্ষ্য করে চার থেকে পাঁচটি গুলি চালায়।"
রক্তস্নাত ভূস্বর্গে ফিরল অমরনাথের স্মৃতি ! সুন্দরী বৈসরন যেন মৃত্যুপুরী
আশাভরি জানান, সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থলে থাকা আরও বেশ কয়েকজনকে গুলি করে। সাহায্য করার জন্য কেউ ছিল না। পুলিশ বা সেনাবাহিনী সেখানে 20 মিনিট পরে পৌঁছায়। হামলার পাঁচ ঘণ্টা পর সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "স্থানীয়রাও সেখানে ইসলামি আয়াত পাঠ করছিল। বিকাল 3টে 30 মিনিট নাগাদ গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। তারপর 5 ঘণ্টা হয়ে গিয়েছে । আমার বাবা এবং কাকার স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে কোনও আপডেট এখনও পাওয়া যায়নি।"
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কাশ্মীরে সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, 26 জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন, এদের বেশিরভাগই পর্যটক। আশাভরি জানেন না যে তাঁর বাবা এবং কাকা বেঁচে আছেন নাকি মারা গিয়েছেন। তিনি, তার মা এবং অন্য একজন মহিলা আত্মীয়কে রক্ষা করা হয়েছিল এবং স্থানীয়রা এবং নিরাপত্তা বাহিনী তাদের পহেলগাঁও ক্লাবে সরিয়ে নিয়ে যায়।
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে একটি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। পর্যটকদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলায় একাধিক পর্যটকের নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং অনেকে জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার পরপরই সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকা খালি করে তল্লাশি অভিযান শুরু করে দিয়েছে।
রক্তাক্ত ভূস্বর্গ: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় মৃত 26, মোদির ফোন; শ্রীনগরে শাহ