গ্যাংটক (সিকিম), 5 জুন: আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হতেই এয়ারলিফটের মাধ্যমে উত্তর সিকিমের ধস কবলিত এলাকায় আটকে থাকা পর্যটকদের উদ্ধারে নামল ভারতীয় বায়ুসেনা ও সিকিম প্রশাসন । বৃহস্পতিবার তিন দফায় ছাটেনে আটকে থাকা 63 জন পর্যটককে উদ্ধার করে পাকইয়ং গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয় ।
প্রথমে এম-17 হেলিকপ্টারে 39 জনকে ছাটেন থেকে উদ্ধার করা হয় । এরপর বায়ুসেনার চিতা হেলিকপ্টার দুর্গম এলাকা থেকে চারজনকে উদ্ধার করে । এরপর ফের এম-17 হেলিকপ্টারে আরও 20 জন পর্যটককে উদ্ধার করে পাকইয়ং বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয় ।

উদ্ধার হওয়া পর্যটকদের মধ্যে দু'জন বিদেশি । পাকইয়ং বিমানবন্দর থেকে পর্যটকদের সিকিম ন্যাশনালাইজ ট্রান্সপোর্টের বাসে গ্যাংটক ফিরিয়ে আনা হয় । গ্যাংটক থেকে তারপর এসএনটি বাসে পর্যটকদের শিলিগুড়ি ও বাগডোগরা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবে সিকিম প্রশাসন ।

অন্যদিকে, এদিন প্রথমে হেলিকপ্টারে করে পানীয় জল, রেশন সামগ্রী ফেলা হয় । পাশাপাশি এয়ারলিফটের মাধ্যমে উদ্ধারকাজ চালাতে ভি-5 ও এম-17 ছাড়া এমআই-39 এবং এমআই-41 হেলিকপ্টার পাঠানো হয় বায়ুসেনার তরফে । ইতিমধ্যে ওই দুই হেলিকপ্টার পাকইয়ং থেকে লাচেন ও ছাটেনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে ।

ধস কবলিত এলাকায় কোনোরকম যোগাযোগ না-থাকায় এনডিআরএফের অতিরিক্ত নয়জনের একটি দলকে হেলিকপ্টারে করে ছাটেন এলাকায় নামানো হয়েছে । ওই দলের কাছে রয়েছে স্যাটেলাইট ফোন । ওই ফোনের সাহায্যে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে আটকে থাকা পর্যটকরা । এর আগে অত্যাধুনিক সরঞ্জামের সঙ্গে 29 জনের একটি বিশেষ এনডিআরএফের দলকে পাঠানো হয়েছিল ধস কবলিত এলাকায় ।

এছাড়াও সিকিমের বিদ্যুৎ বিভাগ ও টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের 15 জনের একটি দলকেও এয়ারলিফট করে ছাটেন ও লাচেনে পাঠানো হয়েছে । যে সব জায়গায় গাড়ি পৌঁছাতে পারছে না, সেই সব জায়গায় ওই দলটি বিদ্যুৎ পরিষেবা, মোবাইল টাওয়ার, টেলিফোন লাইন, ইনভার্টার এইসব জরুরিকালীন পরিষেবা ঠিক করার কাজ করবে । এমনকী, দলের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত পোর্টেবল ব্যাকআপ পাঠানো হয়েছে ।

অন্যদিকে, সিকিম পুলিশের তরফে কমিউননিকেশন বিভাগ ও প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারী পুলিশের দলকে ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে ধস কবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে । যেসব জায়গায় সেতু, বেইলি ব্রিজ ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই সব জায়গায় অন্তত পায়ে হাঁটার পথ তৈরি করার কাজ শুরু করেছে ভারতীয় সেনা ও বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন ।

এদিন পাকইয়ং বিমানবন্দরে পর্যটকদের সঙ্গে দেখা করে পরিস্থিতির খোঁজ নেন সিকিমের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব মিঙ্গমা টি শেরপা, ডিরেক্টর প্রভাকর রাই, সহকারি ডিরেক্টর রাজীব রোকা । পর্যটকদের সঙ্গে দেখা করার পর সচিব মিঙ্গমা টি শেরপা বলেন, "পর্যটকদের উদ্ধারে এয়ারলিফট শুরু হয়েছে । এদিন সকাল থেকে দফায় দফায় উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে । আরও কিছু পর্যটক আটকে রয়েছেন । আবহাওয়া ভালো থাকলে তাদেরও উদ্ধার করা হবে । বিশেষ প্রশিক্ষিত দলকে ধস কবলিত এলাকায় উদ্ধারে পাঠানো হচ্ছে । উদ্ধার হওয়া পর্যটকদের বাড়ি ফিরতে সবরকম সাহায্য করা হবে ।"
