নয়াদিল্লি, 15 মে: রাষ্ট্রপতিকে কি সময় বেঁধে দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট ? শীর্ষ আদালতের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর চাইলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৷ তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবি সে রাজ্যের বিধানসভায় দু'বার পাশ হওয়া দশটি বিলে স্বাক্ষর না করে রেখে দিয়েছিলেন ৷ এই সংক্রান্ত একটি মামলায় রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতিকে যে কোনও বিলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিন মাস সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ এই রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে 14টি প্রশ্ন করেছেন রাষ্ট্রপতি ৷
8 এপ্রিলের সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া সেই রায়কে দৃঢ়ভাবে খণ্ডন করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৷ পাশাপাশি রায়ের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন দেশের প্রথম নাগরিক ৷ তিনি জানান, সংবিধানে এই ধরণের কোনও সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। শীর্ষ আদালতের রায় সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সংবিধানের 200 নম্বর ধারায় উল্লেখ করেন তিনি ৷ এই ধারায় রাজ্যপালের ক্ষমতা থেকে শুরু করে কোনও বিলে তাঁর সম্মতি বা অসম্মতি দেওয়ার বিষয়টি সবিস্তারে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ রাষ্ট্রপতির পর্যবেক্ষণ, এই ধারায় কোনও সময়ের উল্লেখ নেই ৷ একইভাবে, 201 ধারায় বিলের ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির কী করণীয় তা বলা আছে ৷ সেখানেও সময়ের উল্লেখ নেই ৷ তার মানে বিল নিয়ে কতদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া নেই ৷
ভারতের সংবিধানকে বিশ্লেষণ করলে এমন কতগুলি দিকের সন্ধান পাওয়া যাবে যেখান থেকে স্পষ্ট, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কোনও একটি রাজ্য সরকার যদি কোনও আইন প্রণয়ন করতে চায় তাহলে রাষ্ট্রপতির থেকে সম্মতি নিতে হবে ৷ আবার 200 এবং 201 ধারাকে ব্যাখ্যা করলে বোঝা যায় তাঁদের কাছে আসা বিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের গণতন্ত্র, আইনি অভিন্নতা, জাতীয় অখণ্ডতা, দেশের নিরাপত্তা এবং ক্ষমতার পৃথকীকরণের তত্ত্বকে মাথায় রাখতে হবে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে, ধারার ব্যাখ্য়া তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি আদতে সুপ্রিম-রায়ের বৈধতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন ৷
রাষ্ট্রপতির প্রতিক্রিয়ার একটি অংশে সংবিধানের কয়েকটি ধারার কথা আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ কোনও একটি আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে বিবেচনা করার দরকার হলে দেশের যে কোনও নাগরিক তাঁর দায়ের করা মামলায় 32 নম্বর ধারার কথা উল্লেখ করতে পারেন ৷ আবার কোনও একটি অঙ্গ রাজ্যের সরকারে সঙ্গে দেশ বা অন্য রাজ্যের সংঘাতের মিমাংসা করতে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের 131 নম্বর ধারার উল্লেখ করতে পারে ৷ কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে 32 নম্বর ধারা প্রয়োগই বেশি হয়ে থাকে ৷ এরপর 142 নম্বর ধারার বিষয়টিরও উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি ৷ এই ধারায় শীর্ষ আদালতকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে সংবিধান ৷ তাতে বলা হয়েছে, ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালত যে কোনও রকমের রায় দিতে পারে ৷ কিন্তু সেই রায়ের পরিধি কতটা তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন রাষ্ট্রপতি ৷ পাশাপাশি এসেছে 145(3) ধারার কথাও ৷ সংবিধানের কোনও ধারার ব্যাখ্যা নিয়ে মামলা দায়ের হলে সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে ৷ সেই বেঞ্চে কতজন বিচারপতি থাকবেন তা ঠিক করতে এই ধারার উল্লেখ করা হয়েছে ৷ এখানে সেই ধারার উল্লেখ করে কার্যত শীর্ষ আদালতে দায়ের হওয়া মামলাটি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ৷
'পাকিস্তানের হাতে পরমাণু অস্ত্র কতটা নিরাপদ ?', শ্রীনগরে প্রশ্ন রাজনাথের