নয়াদিল্লি, 18 মে: দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্য এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক মানচিত্রে একটি নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে। ভারত ও ইরান, দুটি প্রাচীন সভ্যতা এবং আধুনিক কৌশলগত অংশীদার, এখন তাদের পারস্পরিক সহযোগিতাকে একটি নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে প্রস্তুত। রবিবার ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা সচিব ডঃ আলী আকবর আহমাদিয়ানের মধ্যে হওয়া গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাকে এই দিকে একটি নির্ণায়ক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই বৈঠকে চাবাহার বন্দর এবং আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডোরের (INSTC) মতো প্রকল্পগুলি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, যা আগামী বছরগুলিতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় একটি 'গেম-চেঞ্জার' হিসাবে প্রমাণিত হতে পারে।
ঐতিহাসিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত:
ভারত ও ইরানের সম্পর্ক কেবল কূটনৈতিক নয়, বরং সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিকভাবেও অত্যন্ত গভীর। উভয় দেশের সভ্যতা হাজার হাজার বছর ধরে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। এখন এই ভাগ করা ইতিহাস একটি আধুনিক কৌশলগত অংশীদারিত্বে রূপান্তরিত হচ্ছে। এই সংলাপের সময়, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দোভাল কেবল পারস্পরিক আস্থার কথাই বলেননি, বরং অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে স্থায়ী সহযোগিতার দৃষ্টিভঙ্গিও উপস্থাপন করেছেন।
Mr. Ajit Doval, National Security Advisor to the Prime Minister of #India, held a telephone conversation with Dr. Ali Akbar Ahmadian, Secretary of the Supreme National Security Council of the Islamic Republic of #Iran and representative of the Supreme Leader.
— Iran in India (@Iran_in_India) May 18, 2025
During the call,… pic.twitter.com/qrRYYHTT2H
ভারতের জন্য কৌশলগত প্রবেশদ্বার চাবাহার বন্দর:
ভারত ইরানের চাবাহার বন্দরকে তার কৌশলগত প্রবেশাধিকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। এই বন্দরটি ভারতকে আফগানিস্তান, মধ্য এশিয়া এবং রাশিয়ায় পৌঁছানোর জন্য সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকর বিকল্প দেয়। পাকিস্তানকে এড়িয়ে, এই বন্দরটি ভারতকে দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় কৌশলগত সুবিধা প্রদান করতে পারে। দোভাল এই প্রকল্পে ইরানের সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং এর দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আবেদন করেন।
আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডোর (INSTC):
আইএনএসটিসি অর্থাৎ আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডোর ভারতকে রাশিয়া এবং ইউরোপের সঙ্গে একটি বিকল্প এবং সস্তা বাণিজ্য পথ। এই করিডোরটি ভারতের জন্য বাণিজ্য বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে তার অংশকেও শক্তিশালী করবে। ডঃ আহমাদিয়ানের বক্তব্য, "এই ধরনের কৌশলগত প্রকল্প আঞ্চলিক সহযোগিতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে"।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং আঞ্চলিক স্থায়িত্বের সমন্বয়:
এই কথোপকথনে কেবল কৌশল এবং বাণিজ্য নয়, সাংস্কৃতিক অংশীদারিত্ব এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। উভয় দেশ স্বীকার করেছে যে, তাদের সহযোগিতা পারস্পরিক স্বার্থের পাশাপাশি সমগ্র দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
সমঝোতা বজায় থাকুক, অজিত দোভালকে ফোনে অনুরোধ চিনের বিদেশমন্ত্রীর