ETV Bharat / bharat

মহারাষ্ট্রের হ্যামলিন ! গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাঁদর ধরেন ওঁরা - MAHARASHTRA MONKEY WHISPERERS

প্রায় 4.5 লক্ষ বাঁদর ধরে ফেলেছেন গিরি ভাইরা। আর তাই কারও কাছে তারা 'ম্যাঙ্কি ম্যান', আবার কারও কাছে 'গিরি-বন্ধু'। মিলেছে সরকারি সম্মানও।

monkey-whisperers
গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাঁদর ধরেন ওঁরা (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : March 25, 2025 at 10:16 PM IST

3 Min Read

অমরাবতি, 25 মার্চ: হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার গল্প আমরা সবাই জানি। এবার মহারাষ্ট্রে এমনই এক পরিবারের সন্ধান মিলল। তাদের লক্ষ্য অবশ্য ইঁদুর নয় বাঁদর।

চাষের জমি বাঁদরদের কাছে যেন 'মুক্তাঞ্চল'। খেতের ফসল নষ্ট করা যেন তাদের জাতীয় কর্তব্য! এ গাছ থেকে সে গাছে লাফিয়ে দিব্য ফলও খেয়ে চলে বাঁদরের দল। ক্ষতির মুখে পড়তে হয় কৃষকদের। তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই বাঁদর ধরে গিরি পরিবার। পরে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। প্রায় 4.5 লক্ষ বাঁদর ধরে ফেলেছেন গিরি ভাইরা।

সম্বোধন গিরি এবং তাঁর দুই ভাই সম্প্রতি অমরাবতীর একটি কৃষি জমি থেকে 62টি বাঁদর ধরেন। তাঁরা গিয়ে দেখেন, জমিতে হাজির বেশ কিছু বাঁদর। ফসল খাওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এরপরই শুরু 'অ্যাকশান'। অনায়াস দক্ষতায় মাত্র 30 মিনিটের মধ্যে 62টি বাঁদর ধরে ফেলেন তাঁরা। শুনে অবাক লাগলেও গিরি ভাইদের কাছে বাঁদর ধরার কাজ মোটেই 'পর্বত-সম' নয়। তাঁরা বহুদিন ধরে বলা ভালো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই কাজ করে চলেছেন। আগের প্রজন্ম কাজ যেভাবে করত তাকে আরও খানিকটা উন্নত করেছে এই প্রজন্ম।

বাঁদর ধরার কাজ আলাদা করে শিখতে হয় না গিরি পরিবারের। সম্বোধন জানালেন, তাঁর যখন দশ বছর বয়স তখন থেকই বাঁদর ধরছেন। পরিবারের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। রাজ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার গ্রামে ঘুরে ঘুরে এই কাজে তাঁর অভিজ্ঞতা আরও অনেকটাই বেড়েছে।

কাজ কীভাবে হয় ?

খোলা মাঠের কোনও একটি জায়গায় নিজেদের খাঁচা রাখেন তাঁরা। এরপর বাঁদরদের ভুট্টা আর কলার লোভ দেখানোর পালা শুরু । লোভে পা দিয়ে একবার খাঁচায় পা দিলেই আর রক্ষা নেই। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাবে খাঁচার দরজা। তবে এই প্রক্রিয়ায় বাঁদরদের চোট-আঘাত যাতে না লাগে সে ব্যাপারে সদাসতর্ক সম্বোধনরা।

তাঁর কথায়, "আমরা জানি ওরা খেতে ভালোবাসে। খাবারের লোভ দেখিয়ে খাঁচা পর্যন্ত নিয়ে আসাই আমাদের কাজ। এর বেশি কিছু নয়। " কোনও একটি জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ছোট ছোট খাঁচা থেকে বাঁদরদের বের করে নিয়ে এসে বড় খাঁচায় রাখা। এই কাজেও ভরসা বাদামের মতো খাবার। খাঁচায় জলের ব্যবস্থাও থাকে। খাঁচা বাঁদরে ভরে গেলে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে আসা হয়।

অমরাবতীর ওই জমির মালিক রবীন্দ্র মেটকর বলেন, "বাঁদরের জন্য আমাদের ফসলের ক্ষতি হচ্ছিল। ফার্ম হাউজের ছাদও ভেঙে গিয়েছিল। তাই গিরি পরিবারের সাহায্য নিলাম।" রবীন্দ্র একা নন, এরকম অনেকেকেই সাহায্য করেছে গিরি পরিবার। আর তাই কারও কাছে তারা 'ম্যাঙ্কি ম্যান', আবার কারও কাছে 'গিরি-বন্ধু'। এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যর হাজার হাজার গ্রামে গিয়ে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ বাঁদর তারা উদ্ধার করেছে।

সম্বোধনরা আরও জানান, বাঁদররা কৃষি জমির ক্ষতি করে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আবারও মানুষও যে তাদের অকারণে বিরক্ত করে সেটাও একই রকম সত্যি। বাঁদররা জঙ্গলে চলে গেলে দুটো সমস্যারই সমাধান হয়। কাজের স্বীকৃতিও পেয়েছে পরিবার। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে 60 হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে সম্বোধনদের।

অমরাবতি, 25 মার্চ: হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার গল্প আমরা সবাই জানি। এবার মহারাষ্ট্রে এমনই এক পরিবারের সন্ধান মিলল। তাদের লক্ষ্য অবশ্য ইঁদুর নয় বাঁদর।

চাষের জমি বাঁদরদের কাছে যেন 'মুক্তাঞ্চল'। খেতের ফসল নষ্ট করা যেন তাদের জাতীয় কর্তব্য! এ গাছ থেকে সে গাছে লাফিয়ে দিব্য ফলও খেয়ে চলে বাঁদরের দল। ক্ষতির মুখে পড়তে হয় কৃষকদের। তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই বাঁদর ধরে গিরি পরিবার। পরে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। প্রায় 4.5 লক্ষ বাঁদর ধরে ফেলেছেন গিরি ভাইরা।

সম্বোধন গিরি এবং তাঁর দুই ভাই সম্প্রতি অমরাবতীর একটি কৃষি জমি থেকে 62টি বাঁদর ধরেন। তাঁরা গিয়ে দেখেন, জমিতে হাজির বেশ কিছু বাঁদর। ফসল খাওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এরপরই শুরু 'অ্যাকশান'। অনায়াস দক্ষতায় মাত্র 30 মিনিটের মধ্যে 62টি বাঁদর ধরে ফেলেন তাঁরা। শুনে অবাক লাগলেও গিরি ভাইদের কাছে বাঁদর ধরার কাজ মোটেই 'পর্বত-সম' নয়। তাঁরা বহুদিন ধরে বলা ভালো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই কাজ করে চলেছেন। আগের প্রজন্ম কাজ যেভাবে করত তাকে আরও খানিকটা উন্নত করেছে এই প্রজন্ম।

বাঁদর ধরার কাজ আলাদা করে শিখতে হয় না গিরি পরিবারের। সম্বোধন জানালেন, তাঁর যখন দশ বছর বয়স তখন থেকই বাঁদর ধরছেন। পরিবারের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। রাজ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার গ্রামে ঘুরে ঘুরে এই কাজে তাঁর অভিজ্ঞতা আরও অনেকটাই বেড়েছে।

কাজ কীভাবে হয় ?

খোলা মাঠের কোনও একটি জায়গায় নিজেদের খাঁচা রাখেন তাঁরা। এরপর বাঁদরদের ভুট্টা আর কলার লোভ দেখানোর পালা শুরু । লোভে পা দিয়ে একবার খাঁচায় পা দিলেই আর রক্ষা নেই। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাবে খাঁচার দরজা। তবে এই প্রক্রিয়ায় বাঁদরদের চোট-আঘাত যাতে না লাগে সে ব্যাপারে সদাসতর্ক সম্বোধনরা।

তাঁর কথায়, "আমরা জানি ওরা খেতে ভালোবাসে। খাবারের লোভ দেখিয়ে খাঁচা পর্যন্ত নিয়ে আসাই আমাদের কাজ। এর বেশি কিছু নয়। " কোনও একটি জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ছোট ছোট খাঁচা থেকে বাঁদরদের বের করে নিয়ে এসে বড় খাঁচায় রাখা। এই কাজেও ভরসা বাদামের মতো খাবার। খাঁচায় জলের ব্যবস্থাও থাকে। খাঁচা বাঁদরে ভরে গেলে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে আসা হয়।

অমরাবতীর ওই জমির মালিক রবীন্দ্র মেটকর বলেন, "বাঁদরের জন্য আমাদের ফসলের ক্ষতি হচ্ছিল। ফার্ম হাউজের ছাদও ভেঙে গিয়েছিল। তাই গিরি পরিবারের সাহায্য নিলাম।" রবীন্দ্র একা নন, এরকম অনেকেকেই সাহায্য করেছে গিরি পরিবার। আর তাই কারও কাছে তারা 'ম্যাঙ্কি ম্যান', আবার কারও কাছে 'গিরি-বন্ধু'। এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যর হাজার হাজার গ্রামে গিয়ে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ বাঁদর তারা উদ্ধার করেছে।

সম্বোধনরা আরও জানান, বাঁদররা কৃষি জমির ক্ষতি করে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আবারও মানুষও যে তাদের অকারণে বিরক্ত করে সেটাও একই রকম সত্যি। বাঁদররা জঙ্গলে চলে গেলে দুটো সমস্যারই সমাধান হয়। কাজের স্বীকৃতিও পেয়েছে পরিবার। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে 60 হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে সম্বোধনদের।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.