নয়াদিল্লি, 18 এপ্রিল: নিজের দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার কীভাবে সুরক্ষিত করা যায়, সেদিকে নিজর দিক বাংলাদেশ ৷ মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনা নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের প্রেস সচিবের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা জবাব দিল বিদেশ মন্ত্রক ৷ শুক্রবার ঢাকার কড়া সমালোচনা করে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিও জারি করা হয়েছে ৷ এর আগে বাংলাদেশে হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনায় একাধিক বার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত ৷
সম্প্রতি কয়েকটি সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনায় বাংলাদেশি যোগ রয়েছে ৷ প্রতিবেশী থেকে দুষ্কৃতীরা সীমান্ত টপকে রাজ্যে ঢুকে হামলার ঘটনা চালিয়েছে ৷ বৃহস্পতিবার এই দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ইউনূসের অন্তর্বর্তী প্রশাসন ৷ সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, "মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় বাংলাদেশ জড়িত বলে রটনার চেষ্টা চলছে ৷ আমরা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করছি ৷"
এরই সঙ্গে তিনি ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতকে পরামর্শ দেন ৷ শফিকুল বলেন, "আমরা মুসলিমদের উপর আক্রমণের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি ৷ এর ফলে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে ৷ সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৷ আমরা ভারত সরকার এবং পশ্চিমঙ্গ সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক ৷"
Our response to media queries regarding comments made by Bangladesh officials on the developments in West Bengal:
— Randhir Jaiswal (@MEAIndia) April 18, 2025
🔗 https://t.co/P6DuqlRndJ pic.twitter.com/HmIai5U0Vp
এরপরে শুক্রবার সকালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের এহেন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বিবৃতি জারি করে বিদেশ মন্ত্রক ৷ মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্যকে আমরা খারিজ করছি ৷ ভারতে যা ঘটেছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থার তুলনা টানার মিথ্যা প্রচেষ্টা ৷ বাংলাদেশে এধরনের অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় ৷"
ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো প্রসঙ্গে রণধীর সাংবাদিকদের বলেন, "বাংলাদেশ অযাচিত ও অনধিকার মন্তব্য না-করে নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার প্রতি নজর দিক ৷"
এর আগে গত অগস্টে বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠিত হয় ৷ দেশের এই রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্য়ালঘু সম্প্রদায়ের উপর হিংসার ঘটনা সামনে আসতে থাকে ৷ তখন হিন্দুদের উপর অত্যাচারের ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছিল ভারত ৷ বাংলাদেশ সরকারের কাছে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিজেপি সরকার ৷ সনাতনী সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পুলিশ ৷ তিনি এখনও কারাবাসে ৷ তাঁর এই গ্রেফতারির নিন্দি করে ভারত সরকার ৷
এপ্রিলের গোড়ার দিকে থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে বৈঠকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয়টি ওঠে ৷