নয়াদিল্লি, 21 ফেব্রুয়ারি: দু'দেশের সীমান্ত সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে 4 দিন আগে শুরু হয়েছিল ভারত-বাংলাদেশ 55তম বর্ডার কো-অর্ডিনেশন বৈঠক ৷ বৃহস্পতিবার দিল্লিতে শেষ হল বিএসএফ-বিজিবি'র ডিরেক্টর জেনারেল স্তরের সেই বৈঠক ৷ যদিও সীমান্ত সমস্যার কোনও সমাধান বের হল না ৷ তবে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে দাবি, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (BSF) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (BGB) দুই ডিজি'র ৷
বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক ছিল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ৷ সীমান্তের জিরো লাইন থেকে 150 গজের মধ্যে কাঁটাতারের নির্মাণ, অস্ত্র ও মাদক পাচার ও সর্বোপরি জঙ্গি প্রবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলির সমাধান হয় কি না, সেদিকেই নজর ছিল সকলের ৷ তবে 4 দিনের বৈঠক শেষে অমীমাংসিত রয়ে গেল সেই সমস্যা । বিএসএফের ডিজি দলজিৎ সিং চৌধুরী বলেন, "ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতি গুরুত্বপূর্ণ ৷ দুই দেশের সীমান্তে প্রায়ই বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দেয় ৷ তবে, আমাদের স্থানীয় সীমান্তরক্ষীরা সর্বদা সেই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেন ৷"
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার সবদলপুর গ্রামে দুই দেশের সীমান্তে 150 কিলোমিটারের মধ্যে কাঁটাতার লাগানোর কাজে বিএসএফ-দের বারবার বাধা দিয়েছে বিজিবি ৷ অবশ্য সেই প্রসঙ্গে বিজিবি'র ডিজি মেজর জেনারেল মহম্মদ আসরাফুজ্জামানের বক্তব্য, এই ধরনের নির্মাণের 'যৌক্তিকতা' থাকা প্রয়োজন ৷ তিনি বলেন, "আন্তর্জাতিক সীমান্তে 150 গজের মধ্যে যেকোনও নির্মাণের জন্য আলোচনার প্রয়োজন ৷ কেন কাঁটাতারের প্রয়োজন ? তার যুক্তি থাকতে হবে ৷ সেক্ষেত্রে পারস্পরিক পরামর্শ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ৷" অপর পক্ষের তরফে কোনও আপত্তি না-থাকলে নির্মাণ করা যেতে পারে বলে জানান বিজিবি'র ডিজি ৷
তবে, কাঁটাতারের সমস্যার সমাধান না হলেও বৈঠক ফলপ্রসূ বলে জানান দুই দেশের সীমান্তরক্ষীর প্রধান ৷ 4 দিনের এই বৈঠকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা শুরু করা হয় ৷ কর্মরত বিএসএফ জওয়ানদের উপর আক্রমণ রোধ, ভারতীয়দের উপর বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের হামলা, বাংলাদেশের ইন্ডিয়ান ইনসার্জেন্ট গ্রুপ (আইআইজি), প্রভৃতি বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয় ৷
বৈঠক শেষে দু'দেশের তরফে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয় ৷ বিবৃতিতে, সীমান্ত সমস্য়া সমাধান নিয়ে একে উদ্বেগ সম্পর্কে অবগত হয়েছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীর প্রধান ৷ সেই সঙ্গে, গঠনমূলক এবং ইতিবাচক আলোচনার মাধ্যমে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সমস্যাগুলির সমাধান করা হবে বলে জানান তাঁরা ৷ পাশাপাশি, সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের উপর হামলা প্রসঙ্গে তাঁরা জানান, দুই দেশের তরফেই নজরদারি আরও বাড়ানো হবে ৷ ভবিষ্যতে যাতে এই ধরণের ঘটনা না-ঘটে, তা নিশ্চিত করতে দুই দেশের তরফেই উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে বিবৃতিতে জানায় ভারত ও বাংলাদেশ ৷ সেই সঙ্গে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীর দুই প্রধান জানান, বাংলাদেশের ঢাকায় 2025 সালের জুলাই মাসে পরবর্তী বৈঠকের আয়োজন করা হবে ৷
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ৷ তার আঁচ ছড়ায় ভারতেও ৷ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি ৷ বিশেষত, কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে রীতিমতো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা ৷
