হায়দরাবাদ, 16 মে: নিউরোসার্জিক্যাল চিকিৎসায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ করল হায়দরাবাদের কেআইএমএস (KIMS) হাসপাতাল ৷ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত গামা নাইফ রেডিয়োসার্জারি প্রযুক্তি চালু হল নিজামের শহরের এই হাসপাতালে ৷ নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে কাটাছেঁড়া ছাড়াই মস্তিষ্কের চিকিৎসা সম্ভব হবে এবার থেকে ৷ মস্তিষ্কের জটিল রোগ উপশমে নয়া এই প্রযুক্তি যে ভীষণ কার্যকরী হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ৷
এই বিষয়ে হায়দরাবাদের KIMS (কৃষ্ণা ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস) হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল ডিরেক্টর (CMD) চিকিৎসক বোলিনেনি ভাস্কর রাও বলেন, "দক্ষিণ ভারতের সবচেয়ে উন্নত গামা নাইফ KIMS হাসপাতালে নিয়ে আসতে পেরে আমরা খুবই গর্বিত। মস্তিষ্কের চিকিৎসায় এটি একটি নতুন বিপ্লব। আমাদের লক্ষ্য হল এই বিশ্বমানের প্রযুক্তি রোগীদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া।"

গামা নাইফ রেডিয়োসার্জারি কী ?
- গামা নাইফ পদ্ধতিটি সাধারণত মস্তিষ্কের টিউমার বা অন্যান্য জটিল অবস্থার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
- গামা নাইফ একটি স্টেরিওট্যাকটিক রেডিয়োসার্জারি পদ্ধতি ৷ যা রেডিয়েশন থেরাপির মাধ্যমে ছোট ছোট টিউমার বা মস্তিষ্কের অন্যান্য সমস্যার চিকিৎসা করে।
- এই পদ্ধতিতে কাটাছেঁড়া ছাড়াই অস্ত্রোপচার করা হয় ৷ যা তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ।
- গামা নাইফ চিকিৎসা সাধারণত অল্প সময়ে সম্পন্ন হয়।
- রক্তক্ষরণের কোনও ঝুঁকি থাকে না এবং কোনও সাধারণ অ্যানাস্থেশিয়ার প্রয়োজন হয় না।
- এই প্রক্রিয়া চলাকালীন রোগী জেগে থাকেন এবং কোনও ব্যথা বা যন্ত্রণা হয় না ৷
- এই রেডিয়োসার্জারির কিছুক্ষণ পরই রোগী স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে থাকেন ৷ বেশিরভাগ রোগী একদিনেই বাড়ি ফিরে যেতে পারেন ৷ খুব একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই ৷
গামা নাইফ রেডিয়োসার্জারির বিশ্বব্যাপী প্রভাবের পরিসংখ্যান :-
- গামা নাইফ চালু হওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী 10 লক্ষেরও বেশি রোগী এই চিকিৎসা করিয়েছেন।
- শুধুমাত্র ভারতেই প্রতিবছর 8 হাজারেরও বেশি গামা নাইফ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয় ৷
- গামা নাইফ রেডিয়োসার্জারিতে 90 শতাংশ পর্যন্ত সাফল্য পাওয়া যায় ৷
- সাধারণত গামা নাইফ পদ্ধতিতে চিকিৎসায় 30 মিনিট থেকে 2 ঘণ্টা সময় লাগে ৷ তাই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না ।
- চিকিৎসার পর 24 থেকে 48 ঘণ্টার মধ্যে 90 শতাংশেরও বেশি রোগী স্বাভাবিক কার্যকলাপে ফিরে আসেন ।
- অন্যান্য ক্ষেত্রে রোগীরা প্রায়শই অস্ত্রোপচারের 48 ঘণ্টার মধ্যে ব্যথা বা যন্ত্রণা অনুভব করেন, কিন্তু নিউরোসার্জিক্যাল এই চিকিৎসায় তা হয় না ৷
- গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গামা নাইফ পদ্ধতিতে 2 শতাংশেরও কম রোগী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন।