ETV Bharat / bharat

তীব্র গরমে পুড়ছে বিহার থেকে রাজস্থান, 48 ঘণ্টায় হিটস্ট্রোকে মৃত 41 - Deaths due to heatstroke

Deaths due to heatstroke: গত কয়েকদিন ধরে পারদের ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ঝাড়খণ্ডে ৷ প্রচণ্ড গরমে গত 48 ঘণ্টায় প্রাণ গিয়েছে 41 জনের ৷ বিহারে সর্বাধিক 19 জনের হিটস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 31, 2024, 1:00 PM IST

ETV BHARAT
তীব্র গরমে পুড়ছে উত্তর থেকে মধ্য ভারত (নিজস্ব চিত্র)

হায়দরাবাদ, 31 মে: তীব্র দাবদাহে জ্বলছে বিহার থেকে মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা থেকে ঝাড়খণ্ড ৷ বেশ কয়েকটি রাজ্য মিলিয়ে গত দুই দিনে হিটস্ট্রোকের কারণে প্রাণ গিয়েছে 41 জনের ৷ এই সময়টায় রাজ্যগুলিতে তাপমাত্রার পারদ 47 ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ছিল বলে জানা গিয়েছে ৷

গরমে সর্বাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বিহারে । বিহারে গত 48 ঘণ্টায় তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বেশকয়েকজন পুলিশকর্মী-সহ প্রায় 19 জনের মৃত্যু হয়েছে । তীব্র তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর । বুধবার বক্সারের নওয়ানগর থানা এলাকায় ফ্ল্যাগ মার্চের সময় বিহার মিলিটারি পুলিশের একজন কর্মী মারা যান এবং হিট স্ট্রোকের কারণে রোহতাসে একজন সাব-ইন্সপেক্টরের মৃত্য়ু হয়েছে ৷

পুলিশ সুপার মণীশ কুমার বলেন, ফ্ল্যাগ মার্চ করার সময় গোর্খা রেজিমেন্টে নিযুক্ত বিএমপি কর্মীর স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাঁকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । রোহতাসের দেহরিতে পুলিশ লাইনে কর্তব্যরত ভোজপুরের বিহিয়ার বাসিন্দা সাব-ইন্সপেক্টর দেবনাথ রাম প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে প্রাণ হারান ৷

ওড়িশাতে গরমের কারণে 10 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ তাঁরা সকলেই রাজ্যের রাউরকেলা শহরের বাসিন্দা ৷ হিটস্ট্রোকে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ রাউরকেলা সরকারি হাসপাতালের (আরজিএইচ) ডিরেক্টর-ইন-চার্জ (ডিআইসি) ডা. সুধারানী প্রধানের মতে, দুপুর 2টো থেকে ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে মৃত্যুর ঘটনাগুলি ঘটে । তিনি বলেন, হাসপাতালে পৌঁছানোর সময় আটজন মারা যান, বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছেন । তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা ছিল প্রায় 103-104 ডিগ্রি ফারেনহাইট, যা আবহাওয়ার অবস্থার কারণে হয়েছে ৷

বৃহস্পতিবার 12টি জায়গায় তাপমাত্রা 44 ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি বেড়ে যাওয়ায় ওড়িশাজুড়ে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয় ৷ বিশেষ করে পশ্চিম অঞ্চল জুড়ে গরমের তীব্রতার কারণে মৃত্যুগুলি ঘটে । আইএমডি তার সন্ধ্যার বুলেটিনে বলেছে যে, রাজ্যের 19টি জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 40 ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি রেকর্ড করা হয়েছে ।

রাজস্থানেও তাপপ্রবাহের ধাক্কায় এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের প্রাণ গিয়েছে । জনস্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. রবি প্রকাশ মাথুর বলেন, তীব্র গরমের মধ্যেও চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিভাগ ইতিমধ্যে মার্চ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু করেছে । মাথুর বলেন, "এখনও পর্যন্ত রাজ্যে তাপপ্রবাহের কারণে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে ।"

ঝাড়খণ্ডের পালামু জেলায়, একজন মহিলা-সহ কমপক্ষে চারজন তাপপ্রবাহ সম্পর্কিত উপসর্গের কারণে মারা গিয়েছেন ৷ কারণ ওই জেলায় বৃহস্পতিবার রাজ্যের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 47.4 ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গিয়েছিল বলে জানান এক আধিকারিক ৷ পালামুর সিভিল সার্জন ডা. অনিল কুমার সিং বলেন, "একটি হাসপাতালে চিকিৎসার সময় তিনজন মারা গিয়েছেন, আর একজন হাসপাতালের বাইরে মারা যান । ওই রোগীরা তাপপ্রবাহ সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছিলেন ।" তিনি বলেন, জেলা হাসপাতালে তাপপ্রবাহজনিত অসুস্থতায় প্রায় 10 জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন । তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য একটি দ্রুত অ্যাকশন দলও গঠন করা হয় ৷

বুধবার, গাড়োয়া জেলা থেকে তাপপ্রবাহ সম্পর্কিত অসুস্থতার কারণে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে । মধ্যপ্রদেশে দুটি শিশু বৃহস্পতিবার গোয়ালিয়রে হিটস্ট্রোকে মারা গিয়েছে । দুই ভাই-বোন অটোরিকশায় করে মা ও ঠাকুমার সঙ্গে ওষুধ আনতে গিয়েছিল । দুজনের বয়স যথাক্রমে 12 এবং 14 বছর । শিশুটির বাবা রামবাবু শাক্য বলেন, "আমি কাজে বাইরে ছিলাম । সকাল 9টা থেকে সাড়ে 9টার দিকে ওরা ওষুধ নিতে বাড়ি থেকে বের হয় । ফিরে এসে তারা অসুস্থ হয়ে মারা যায় । তাদের সঙ্গে আমার মা ও স্ত্রীও ছিলেন ।"

উত্তরপ্রদেশে বৃহস্পতিবার হিটস্ট্রোকের কারণে একজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে এবং তাঁর ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা কিশোরী দেবী (58), তাঁর ছেলে প্রদীপ মাহত এবং মেয়ে সরিতাকে নিয়ে হরিহর এক্সপ্রেসে বিহারের ছাপরা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ৷ তখনই তাঁর এবং তাঁর ছেলের অবস্থার অবনতি হয় বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনীর আধিকারিকরা ৷ সরিতা জানান, ট্রেন বারাণসী পৌঁছনো পর্যন্ত তাঁর মা ভালোই ছিলেন । বারাণসী থেকে ট্রেন ছাড়ার সময় হঠাৎ তাঁর মা বমি শুরু করেন ।

সরিতার অভিযোগ, তিনি টিটিইকে বিষয়টি জানালেও তিনি ট্রেন থামাননি এবং তাঁর মায়ের চিকিৎসা করা হয়নি । ট্রেনটি যখন সুলতানপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছয়, তখন কিশোরী দেবী অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং প্রদীপের অবস্থাও খারাপ হয়ে গিয়েছিল । দুজনকেই সঙ্গে সঙ্গে রেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । তবে তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে চিকিৎসকরা তাঁদের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয় ৷ তবে কিশোরী দেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় ৷

হায়দরাবাদ, 31 মে: তীব্র দাবদাহে জ্বলছে বিহার থেকে মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা থেকে ঝাড়খণ্ড ৷ বেশ কয়েকটি রাজ্য মিলিয়ে গত দুই দিনে হিটস্ট্রোকের কারণে প্রাণ গিয়েছে 41 জনের ৷ এই সময়টায় রাজ্যগুলিতে তাপমাত্রার পারদ 47 ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ছিল বলে জানা গিয়েছে ৷

গরমে সর্বাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বিহারে । বিহারে গত 48 ঘণ্টায় তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বেশকয়েকজন পুলিশকর্মী-সহ প্রায় 19 জনের মৃত্যু হয়েছে । তীব্র তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর । বুধবার বক্সারের নওয়ানগর থানা এলাকায় ফ্ল্যাগ মার্চের সময় বিহার মিলিটারি পুলিশের একজন কর্মী মারা যান এবং হিট স্ট্রোকের কারণে রোহতাসে একজন সাব-ইন্সপেক্টরের মৃত্য়ু হয়েছে ৷

পুলিশ সুপার মণীশ কুমার বলেন, ফ্ল্যাগ মার্চ করার সময় গোর্খা রেজিমেন্টে নিযুক্ত বিএমপি কর্মীর স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাঁকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । রোহতাসের দেহরিতে পুলিশ লাইনে কর্তব্যরত ভোজপুরের বিহিয়ার বাসিন্দা সাব-ইন্সপেক্টর দেবনাথ রাম প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে প্রাণ হারান ৷

ওড়িশাতে গরমের কারণে 10 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ তাঁরা সকলেই রাজ্যের রাউরকেলা শহরের বাসিন্দা ৷ হিটস্ট্রোকে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ রাউরকেলা সরকারি হাসপাতালের (আরজিএইচ) ডিরেক্টর-ইন-চার্জ (ডিআইসি) ডা. সুধারানী প্রধানের মতে, দুপুর 2টো থেকে ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে মৃত্যুর ঘটনাগুলি ঘটে । তিনি বলেন, হাসপাতালে পৌঁছানোর সময় আটজন মারা যান, বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছেন । তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা ছিল প্রায় 103-104 ডিগ্রি ফারেনহাইট, যা আবহাওয়ার অবস্থার কারণে হয়েছে ৷

বৃহস্পতিবার 12টি জায়গায় তাপমাত্রা 44 ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি বেড়ে যাওয়ায় ওড়িশাজুড়ে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয় ৷ বিশেষ করে পশ্চিম অঞ্চল জুড়ে গরমের তীব্রতার কারণে মৃত্যুগুলি ঘটে । আইএমডি তার সন্ধ্যার বুলেটিনে বলেছে যে, রাজ্যের 19টি জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 40 ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি রেকর্ড করা হয়েছে ।

রাজস্থানেও তাপপ্রবাহের ধাক্কায় এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের প্রাণ গিয়েছে । জনস্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. রবি প্রকাশ মাথুর বলেন, তীব্র গরমের মধ্যেও চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিভাগ ইতিমধ্যে মার্চ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু করেছে । মাথুর বলেন, "এখনও পর্যন্ত রাজ্যে তাপপ্রবাহের কারণে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে ।"

ঝাড়খণ্ডের পালামু জেলায়, একজন মহিলা-সহ কমপক্ষে চারজন তাপপ্রবাহ সম্পর্কিত উপসর্গের কারণে মারা গিয়েছেন ৷ কারণ ওই জেলায় বৃহস্পতিবার রাজ্যের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 47.4 ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গিয়েছিল বলে জানান এক আধিকারিক ৷ পালামুর সিভিল সার্জন ডা. অনিল কুমার সিং বলেন, "একটি হাসপাতালে চিকিৎসার সময় তিনজন মারা গিয়েছেন, আর একজন হাসপাতালের বাইরে মারা যান । ওই রোগীরা তাপপ্রবাহ সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছিলেন ।" তিনি বলেন, জেলা হাসপাতালে তাপপ্রবাহজনিত অসুস্থতায় প্রায় 10 জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন । তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য একটি দ্রুত অ্যাকশন দলও গঠন করা হয় ৷

বুধবার, গাড়োয়া জেলা থেকে তাপপ্রবাহ সম্পর্কিত অসুস্থতার কারণে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে । মধ্যপ্রদেশে দুটি শিশু বৃহস্পতিবার গোয়ালিয়রে হিটস্ট্রোকে মারা গিয়েছে । দুই ভাই-বোন অটোরিকশায় করে মা ও ঠাকুমার সঙ্গে ওষুধ আনতে গিয়েছিল । দুজনের বয়স যথাক্রমে 12 এবং 14 বছর । শিশুটির বাবা রামবাবু শাক্য বলেন, "আমি কাজে বাইরে ছিলাম । সকাল 9টা থেকে সাড়ে 9টার দিকে ওরা ওষুধ নিতে বাড়ি থেকে বের হয় । ফিরে এসে তারা অসুস্থ হয়ে মারা যায় । তাদের সঙ্গে আমার মা ও স্ত্রীও ছিলেন ।"

উত্তরপ্রদেশে বৃহস্পতিবার হিটস্ট্রোকের কারণে একজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে এবং তাঁর ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা কিশোরী দেবী (58), তাঁর ছেলে প্রদীপ মাহত এবং মেয়ে সরিতাকে নিয়ে হরিহর এক্সপ্রেসে বিহারের ছাপরা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ৷ তখনই তাঁর এবং তাঁর ছেলের অবস্থার অবনতি হয় বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনীর আধিকারিকরা ৷ সরিতা জানান, ট্রেন বারাণসী পৌঁছনো পর্যন্ত তাঁর মা ভালোই ছিলেন । বারাণসী থেকে ট্রেন ছাড়ার সময় হঠাৎ তাঁর মা বমি শুরু করেন ।

সরিতার অভিযোগ, তিনি টিটিইকে বিষয়টি জানালেও তিনি ট্রেন থামাননি এবং তাঁর মায়ের চিকিৎসা করা হয়নি । ট্রেনটি যখন সুলতানপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছয়, তখন কিশোরী দেবী অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং প্রদীপের অবস্থাও খারাপ হয়ে গিয়েছিল । দুজনকেই সঙ্গে সঙ্গে রেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । তবে তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে চিকিৎসকরা তাঁদের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয় ৷ তবে কিশোরী দেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.