কৈঠাল, 17 মে: সোশাল মিডিয়ায় পিস্তল নিয়ে ছবি দিয়েছিল এক তরুণ ৷ সেটাই কাল হল ! ছবি দেখে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ফাঁস হল পাকিস্তান যোগ ৷ হরিয়ানার কৈঠাল জেলার গুলাহ থানা এলাকার বাসিন্দা 25 বছর বয়সি দেবেন্দ্র সিং ধিলোঁকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার আবহের মধ্যে বিজেপি শাসিত রাজ্যে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গত তিন দিনে দ্বিতীয় কাউকে গ্রেফতার করল পুলিশ ৷ এর আগে পানিপথ থেকে নৌমান ইলাহী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷
দেবেন্দ্রর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে দেশের বিভিন্ন সেনা ক্যান্টনমেন্ট, ঘাঁটির মতো সংবেদনশীল ছবি ও ভিডিয়ো তুলে পাকিস্তানে পাচার করছিল ৷ এই তথ্য ফাঁস হয় সোশাল মিডিয়ায় দেবেন্দ্রর পোস্ট করা ছবির সূত্রে ৷ গত 11 মে এক নিরাপত্তা কর্মী গুহলা থানায় অভিযোগ জানান, দেবেন্দ্র ফেসবুকে পিস্তল, বন্দুক হাতে ছবি দিয়েছে ৷ এদিকে তার কাছে এই অস্ত্রগুলি রাখার প্রয়োজনীয় লাইসেন্স নেই ৷

এরপর 13 মে দেবেন্দ্রকে আটক করে পুলিশ ৷ তাকে দু'দিনের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ৷ এই সময় তদন্তে উঠে আসে, দেবেন্দ্র সংবেদনশীল ছবি, ভিডিয়ো পাকিস্তানে পাচার করেছে ৷ তার মোবাইলে সেই প্রমাণ পায় পুলিশ ৷ সাইবার থানায় দেবেন্দ্রর বিরুদ্ধে একটি নতুন মামলা দায়ের হয় এবং তাকে আরও তিনদিন হেফাজতে নেয় পুলিশ ৷
দেবেন্দ্র সিং পঞ্জাবের পাটিয়ালার একটি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর স্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্র ৷ তার পরিবারের আয়ের উৎস কৃষিকাজ ৷ 2024 সালের নভেম্বরে দেবেন্দ্র কাতারপুর করিডর দিয়ে শিখদের ধর্মীয়স্থান নানকানা সাহিবে গিয়েছিল ৷ তখন এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাকে পাকিস্তানে যোগাযোগের ফোন নম্বর দেয় ৷ জানা গিয়েছে, সেখানে দেবেন্দ্র হানি-ট্র্যাপের ফাঁদে পড়েছিল ৷ এরপর পাক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত একটি মেয়ের সঙ্গে আলাপ হয় পড়ুয়ার ৷ সেই সূত্রে সে গুপ্তচরবৃত্তির জালে জড়িয়ে পড়ে ৷
ভারতে ফিরে এলেও পাকিস্তানের এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত দেবেন্দ্র ৷ দেশের সেনাঘাঁটির ছবি-ভিডিয়ো-সহ সেনাদের গতিবিধি সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য পাচার করত শত্রু দেশে ৷ কৈঠালের এসপি আস্থা মোদি বলেন, "প্রথমে দেবেন্দ্রকে ধরা হয়েছিল ফেসবুকে তার বন্দুক হাতে ছবি পোস্ট করার জন্য ৷ জেরার সময় তার এই গুপ্তচরবৃত্তির কাজকর্ম সামনে আসে ৷ তার মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করে ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে ৷ দেবেন্দ্রর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ এই কাজের জন্য সে কোথা থেকে কত টাকা পেয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ৷"
সাম্প্রতিক সময়ে হরিয়ানায় এই গুপ্তচরবৃত্তির একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে স্বভাবতই নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ নৌমান ইলাহীর পর দেবেন্দ্র সিংয়ে গ্রেফতারিতে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন ৷ গুপ্তচর নেটওয়ার্কের সন্ধানে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে ৷