নয়াদিল্লি, 16 মার্চ: হিংসার জেরে মণিপুরের যে সমস্ত বাসিন্দারা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা সেখান থেকেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন ৷ শনিবার এই কথা জানিয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন ৷ এর আগে গত শতাব্দীর নয়ের দশকে এই ব্যবস্থা কাশ্মিরী শরণার্থী, যাঁরা সশস্ত্র জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য উপত্যকা ছেড়ে আসতে বাধ্য হন, তাঁদের জন্য করা হয়েছিল ৷
শনিবার অষ্টাদশ সাধারণ নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে কমিশন ৷ নির্ঘণ্ট ঘোষণার সেই সাংবাদিক বৈঠকেই এই কথা জানান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা সবরকম ব্যবস্থা করছি ৷ আমরা একটি ব্যবস্থা তৈরি করেছি ৷ এই নিয়ে আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি... শিবিরের ভোটারদের শিবির থেকে ভোট দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য । যেমন জম্মু ও কাশ্মীর শরণার্থীদের জন্য একটি ব্যবস্থা রয়েছে... একইভাবে এই ব্যবস্থাটি মণিপুরে প্রয়োগ করা হবে । ভোটারদের নিজ নিজ শিবির থেকে ভোট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে ৷’’
তিনি আরও বলেন, "ভোটারদের কাছে আমার আবেদন, আমরা ব্যালটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিই, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আমরা ব্যবস্থা করব ।" কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে যে ভোট ঘোষণার আগে মণিপুরের সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে ৷ ভোটারদের একটা বড় অংশ যে ঘরছাড়া, সেটা উপলব্ধি করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷’’ তাই শিবিরগুলির কাছে বিশেষ পোলিং বুথ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন ৷
উল্লেখ্য, গত বছরের মে মাস থেকে হিংসা ছড়ায় মণিপুরে ৷ মূলত, মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্য়ে গোলমালের জেরে প্রায় দু’শোজনের প্রাণ যায় ৷ 25 হাজার মানুষকে উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী ৷ সব মিলিয়ে বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় 50 হাজার মানুষ ৷ তাদের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত ৷ এই ভোট প্রক্রিয়া কিভাবে হবে, তা নিয়ে গত 29 ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজীব কুমার ৷
জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপের জেরে যাঁরা সেখান থেকে চলে এসেছেন, তাঁদের জন্য একই ব্যবস্থা করে রেখেছে কমিশন ৷ তাঁরা দেশের যেকোনও প্রান্ত থেকে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারেন ৷ 1996 সাল থেকে এই ব্যবস্থা চলে আসছে ৷ 2002 থেকে দিল্লি, উধমপুর ও জম্মুতে এই শরণার্থীদের জন্য বিশেষ বুথের ব্যবস্থাও করছে নির্বাচন কমিশন ৷
এ দিকে এ দিন যে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হয়েছে, তাতে সাত দফায় ভোট করার কথা জানানো হয়েছে ৷ সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা ৷ সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় নির্বাচন কমিশনকেও ৷ উত্তরে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে যে কাউকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি ৷ এত বড় দেশের একেকটা রাজ্য়ের চরিত্র আলাদা, তাছাড়া অনেক উৎসবও রয়েছে ৷ এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীকেও এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পাঠানোও চ্যালেঞ্জিং ৷ সেসব দিকে খেয়াল রেখেই কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷
আরও পড়ুন: