ভোপাল, 13 এপ্রিল: রাতে মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ তারপর জবরদস্তি মন্দিরের দরজা খুলিয়ে ভিতরে ঢোকার জন্য ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধায় একদল লোক ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, এমনকী মন্দিরের পুরোহিতকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ ৷ শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের দেবাস নামক জায়গায় বিখ্যাত মাতা টেকরি মন্দিরে ৷
এদিকে এই ঘটনাতেও রাজনীতির রং লেগেছে ৷ কংগ্রেসের দাবি, ওই উন্মত্ত জনতার মধ্যে ছিলেন বিজেপি বিধায়কের ছেলে ৷ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল ৷ বরং গেরুয়া শিবিরের তরফে পাল্টা জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে ৷
পুলিশ জানিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবারও রাতে মাতা টেকরি মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে যায় ৷ এদিকে গভীর রাতে একদল লোকজন জোর করে মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করে ৷ পুরোহিত তাঁদের মন্দিরে ঢুকতে বাধা দেন ৷ তখন পুরোহিতকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ৷ স্থানীয় কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পুরোহিত ৷
তিনি অভিযোগে জানান, শুক্রবার গভীর রাতে মন্দিরে আসে জিতু রঘুবংশী ৷ তাঁর সঙ্গে আসে 8-10টি গাড়ি ৷ তারা পুরোহিতকে মন্দিরের দরজা খোলার জন্য চাপ দিতে থাকে ৷ পুরোহিত তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ থেকে শুরু করে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ ৷ জিতু রঘুবংশীর অতীতে অপরাধের রেকর্ড রয়েছে ৷
শনিবার পুলিশের সিটি সুপারিনটেনডেন্ট দীনেশ আগরওয়াল সাংবাদিকদের জানান, একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে ৷ 50টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ বিজেপি নেতার ছেলে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না, সে বিষয়ে কোনও সঠিক উত্তর দেননি পুলিশের এই উচ্চপদস্থ আধিকারিক ৷ তিনি শুধু জানান, তদন্ত চলছে ৷
পাহাড়ের উপরে মাতা টেকরির মন্দির ৷ সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, পাহাড়ের নীচে একের পর এক এসইউভি এসে দাঁড়িয়েছে ৷ তাদের কয়েকটির মাথায় লাল আলো লাগানো রয়েছে ৷ দেবাস শহরের কংগ্রেস সভাপতি মনোজ রজনী এক বিজেপি বিধায়কের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করে বলেন, "বিজেপি বিধায়ক যেন তাঁর ছেলের প্রতি নজর রাখেন ৷ তিনি সনাতনী হওয়ার পরেও এমন একটা কাজ করেছেন ৷"
রাজ্য কংগ্রসের মিডিয়ে সেলের প্রধান মুকেশ নায়ক অভিযোগ করেন, "যাঁরা নিজেদের ধর্মের রক্ষক বলে দাবি করেন, তাঁদের কীর্তি ফাঁস হয়ে গিয়েছে ৷ ইন্দোরের বিধায়ক গোলু শুক্লার ছেলে রাত 12টা 40 মিনিটে (শনিবার) মা চামুণ্ডার মন্দিরে গুন্ডাগিরি করছে ৷ পুরোহিতকে মারধর করছে ৷ আর বিজেপি চুপ করে রয়েছে ৷ এটা ঔদ্ধত্যের কুৎসিত ছবি ৷ ধর্মের প্রতি বিজেপির এই ভক্তি মেকি, নকল ৷"
মধ্যপ্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র পঙ্কজ চতুর্বেদী জানান, এই ঘটনায় বিধায়ক গোলু শুক্লা বা তাঁর ছেলের কোনও যোগাযোগ নেই ৷ তিনি বলেন, "যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ ৷"