নয়াদিল্লি, 8 এপ্রিল: তামিলনাড়ুর সরকারের দশটি গুরুত্বপূর্ণ বিলে স্বাক্ষর না-করে আটকে রাখায় রাজ্যপাল আরএন রবিকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট ৷ মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ রাজ্যপালের এই আচরণকে 'অবৈধ' এবং 'স্বেচ্ছাচারী' বলে অভিহিত করে ৷
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকাকালীন একই অবস্থা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গেও ৷ বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সময়েও বিলে স্বাক্ষর করা নিয়ে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাতের খবর সামনে এসেছে ৷ এবার তামিলনাড়ুর এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়তে হল সে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে ৷
সুপ্রিম-পর্যবেক্ষণ
এদিন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবন জানান, সংবিধানের 200 নম্বর ধারার আওতায় বিল আটকে রাখার কোনও বিশেষ অধিকার নেই রাজ্য়পালের ৷ মন্ত্রিসভার পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে কাজ করতেই হবে ৷ বেঞ্চের তরফে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এই রায় পড়ে শোনান ৷ বেঞ্চ জানায়, তামিলনাড়ু বিধাসভায় দশটি বিল দু'বার পাশ হওয়ার পরও সেগুলি রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য ফেলে রেখে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল আরএন রবি ৷ তাঁর এই সিদ্ধান্ত আইন-বিরুদ্ধ ৷
বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবন বেঞ্চ বলে, "রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য দশটি বিল ফেলে রেখেছিলেন রাজ্যপাল ৷ এটা অবৈধ এবং স্বেচ্ছাচারিতা ৷ এই পদক্ষেপ বাতিল করছে আদালত ৷ দ্বিতীয়বার রাজ্যপালের কাছে বিলগুলি পাঠানো হয়েছে ৷ দ্রুত সম্মতি দিতে হবে ৷"
স্বাগত জানালেন স্ট্যালিন
মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন শীর্ষ আদালতের এই পর্যবেক্ষণকে 'ঐতিহাসিক' বলে উল্লেখ করেছেন ৷ তিনি জানিয়েছেন, এই জয় দেশের সব রাজ্য সরকারের ৷ মুখ্যমন্ত্রী আদালতে জানান, একাধিক বিল বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয় ৷ তিনি সেই বিলগুলি ফিরিয়ে দেন ৷ সেই বিলগুলি দ্বিতীয়বার বিধানসভায় পাশ করিয়ে ফের রাজ্যপালের সম্মতির জন্য পাঠানো হয় ৷
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "সংবিধান অনুযায়ী, বিধানসভায় দ্বিতীয়বার বিল গৃহীত হওয়ার পর তাতে রাজ্যপালের স্বাক্ষর করতে বাধ্য ৷" কিন্তু রাজ্যপাল আরএন রবি দিনের পর দিন বিলগুলি আটকে রাখায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া রাজ্য সরকারের কাছে আর কোনও পথ ছিল না বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
বঙ্গ-রাজনীতির উপর প্রভাব
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় 2019 সালের 30 জুলাই থেকে 2022 সালের 18 জুলাই পর্যন্ত পশ্চিমঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন ৷ সেই সময় বিলে স্বাক্ষর করা নিয়ে একাধিকবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত বাধে ৷ এমনকী বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সময়েও একই ঘটনা ঘটেছে ৷ সেদিক থেকে তামিলনাড়ুর মামলার সুপ্রিম কোর্টের এই রায় অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ ৷
ডিলিমিটেশন নিয়ে স্ট্যালিনের বৈঠক 'অযোগ্যতা লোকানোর নাটক', তোপ এআইএডিএমকে'র