বিজয়ওয়াড়া, 24 মার্চ: দেশজুড়ে শুরু আইপিএলের মরশুম! প্রথম দু'দিনেই কার্যত জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে গিয়েছে ব্যাট-বলের এই আকর্ষক লড়াই। আইপিএল থেকে মোটা টাকা রোজগার করতে প্রস্তুত বুকিরাও। পুলিশের একটি বিশেষ সূত্র জানাচ্ছে গোয়া-বেঙ্গালুরুতে গা-ঢাকা দিয়েছে জুয়াড়িরা। গোয়ায় গিয়ে পর্যটকের ছদ্মবেশে কারবার চালাচ্ছে তারা।
শুধু ক্রিকেটারদের রোজগার বা খেলার মানের দিক থেকেই নয়, গ্ল্যামারের ব্যাপারেও আইপিএল হেলায় হারাতে পারে দুনিয়ার অন্য যে কোনও বাইশ গজের লিগকে । বুকিদের কাছে আইপিএলের দুটো মাস পিক সিজন। মাঠে সেরাটা দিতে দেশি-বিদেশি ক্রিকেটাররা যেমন আগে থেকে প্রস্তুতি সেরে রাখেন তেমনি ঘাঁটি বদল করে ওয়ার্মআপ সেরে রাখছে বিজয়ওয়াড়ার বুকিরাও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজয়ওয়াড়া অযোধ্যানগর, বাওয়াজিপেট, চিত্তিনগর-সহ কয়েকটি এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন বুকি রমরমা কারবার চালায়। আইপিএলের আগে আগে তাদের অনেকে পুলিশের নজর থেকে রক্ষা পেতে বেঙ্গালুরু থেকে শুরু করে গোয়ার মতো জায়গায় চলে গিয়েছে। আরও একটি তথ্য পুলিশের চিন্তা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। দু'বছর আগে এই বুকিদের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে মুম্বইয়ের বেশ কয়েকজন কুখ্যাত বুকির যোগাযোগের কথা জানা গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল মামলাও। এবার এই বুকিদের আচমকা শহর-বদল স্বভাবতই পুলিশকে ভাবাচ্ছে। গোয়ায় যাওয়া বুকিরা নিজেদের পর্যটক বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন হটেলে থাকছে। কারও যাতে সন্দেহ না হয় তার জন্য নিয়মিত ব্যবধানে হোটেল বদলও করছে। বিজওয়াড়ার মতো শহরে তাদের হয়ে বেটিং চক্র চালাচ্ছে সাব এজেন্টরা।
বেটিংয়ের নয়া ধরন
একটা সময় ফোনের মাধ্যমে বেটিং হত। নয়ের দশকের শেষের দিকে ক্রিকেট বেটিং চক্র প্রকাশ্যে আসে। সন্ত্রাসবাদীদের কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে ফোন ট্যাপ করত বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ । সেই সূ্ত্র ধরেই বেটিংয়ের কথা জানা যায়। তবে এখন বেটিং হয় অন্যভাবে। অ্যাপের মাধ্যমে। তার জেরে জুয়াড়িদের বাগে আনাও আগের থেকে কঠিন হয়েছে। বেশ কয়েকটি গ্রুপ তৈরি করে অ্যাপের মাধ্যমে জুয়ার কারবার চলে।
কোনও একটি জুয়াড়ি দলের মাথা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যবসীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। সেখান থেকে বিভিন্ন খবরাখবর আসে। এদের পরে থাকা বড় জুয়াড়িরা। তারা বিভিন্ন বড় শহর এবং শহরের অভিজাত এলাকায় কাজ করে। এরপরে আধা শহরে কাজের জন্য কিছু বুকি থাকে। ইন্টারনেটের হাত ধরে প্রত্যন্ত গ্রামেও এখন বুুকিংয়ের কারবার ছড়িয়ে গিয়েছে। পুরো ব্যাপারটাই অনলাইনে হচ্ছে বলে পুলিশের কাজও অনেকটাই জটিল হয়ে গিয়েছে। সাইবার বিশেষজ্ঞদের সাহায্য ছাড়া তাদের পক্ষে কোনও পদক্ষেপ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে।