নয়াদিল্লি, 24 এপ্রিল: পহেলগাঁওয়ের হামলা নিয়ে আয়োজিত সর্বদল বৈঠকে সরকারে পাশে থাকার বার্তা দিল বিরোধীরা ৷ পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদীদের ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেওয়ারও দাবি উঠল ৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বৈঠক শুরু হওয়ার পর হামলা সম্পর্কে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিস্তারিত তথ্য় দেয় সরকার ৷ উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের তরফে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাও জানানো হয়েছে এই সর্বদল বৈঠকে ৷ নিরাপত্তায় গাফিলতি ছিল কি না তা নিয়েও কথা হয়েছে বৈঠকে ৷
কারা কারা ছিলেন ?
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যসভার দলনেতা জেপি নাড্ডা সরকারের তরফে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ৷ বিরোধীদের তরফে ছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি এবং রাজ্য়সভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে ৷ তৃণমূলের তরফে উপস্থিত ছিলেন লোকসভার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ শরদ পাওয়ারের এনসিপির তরফে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিয়া সুলে ৷ আপের তরফে ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং ৷ আরজেডির তরফে ছিলেন প্রেমচন্দ্র গুপ্ত ৷ সপার তরফে ছিলেন রামগোপাল যাদব ৷
পাশে থাকার বার্তা বিরোধীদের, ইতিবাচক বলল সরকার
সর্বদল বৈঠকে সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিল বিরোধী দলগুলি ৷ মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, "সরকার যে যে পদক্ষেপ নেবে তাকে আমরা সমর্থন জানাব ৷ " একই কথা বলতে শোনা যায় রাহুলকেও ৷ আরও জানা গিয়েছে, সন্ত্রাসবাদী হামলা পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আগামিকাল শুক্রবার কাশ্মীরে যাচ্ছেন রাহুল ৷
এদিকে, বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সুদীপ জানান, নিরাপত্তা গাফিলতির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে ৷ এর পাশাপাশি লোকসভায় তৃণমূলের এই দলনেতা আরও জানান, এমন পরিস্থিতিতে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে ৷ বৈঠক শেষে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেন, "আমরা যেমন আশা করেছিলাম ঠিক সেভাবেই ইতিবাচক বৈঠক হয়েছে ৷" নিরাপত্তা গাফিলতির বিষয় নিয়ে চর্চার বিষয়টি তিনিও স্বীকার করে নিয়েছেন ৷

বৈঠকের আগে
এই বৈঠক শুরুর আগে রাইজিনা হিলসে গিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ৷ মোদি মন্ত্রিসভার এই দুই সদস্যের পাশাপাশি সেনা-বায়ুসেনা এবং নৌ-সেনা বাহিনীর তিন প্রধানও রাষ্ট্রপতি ভবনে যান বলে জানা গিয়েছে ৷ তাছাড়া এদিন 20টি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গেও কথা বলেন বিদেশমন্ত্রী ৷ তাঁদের সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয় ৷
একদিন আগে বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি ৷ প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং বিদেশ মন্ত্রী ৷ এছাড়াও ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, ক্যাবিনেট সচিব টিভি সোমানাথন, প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং, বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি এবং প্রধানমন্ত্রীর দুই প্রধান সচিব পিকে মিশ্র এবং শক্তিকান্ত দাস ৷
এই বৈঠক শেষ হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর কাজ শুরু করে মোদি সরকার ৷ ঠিক হয় 1960 সালের সিন্ধু নদের জল চুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত থাকবে ৷ আটারি সীমান্ত তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। সার্ক ভিসার আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাশাপাশি আগামী মাসের প্রথম দিনের মধ্যে দিল্লিতে থাকা পাকিস্তানের হাইকমিশনারের দফতরের কর্মী সংখ্যা 55 থেকে কমিয়ে 30 করে দিতে হবে বলেও জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক ৷