শিলচর, 19 এপ্রিল: পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হোক ৷ অসমের শিলচরে গিয়ে সাংবাদিকদের এমনটাই বললেন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী ৷ সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনায় বিধ্বস্ত মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকা ৷
এনিয়ে বিজেপি নেতাকে প্রশ্ন করলে, তিনি বলেন, "খুবই দুঃখের ব্যাপার ৷ এখনও বুঝতে পারছি না, কেন বাঙালি পরিবারগুলির উপর অত্যাচার করা হল ৷ ওয়াকফ বিলের সঙ্গে এদের কী লেনাদেনা ?" রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে তিনি রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা বলেন ৷
মিঠুন বলেন, "এখন তাঁরা (ক্ষতিগ্রস্ত) রাস্তায় ৷ ত্রাণশিবিরে খিচুড়ি খাচ্ছেন ৷ এটা খুবই দুঃখের ৷ ওঁদের বাড়িঘর হয়তো ছোট কুঠি, কিন্তু সেটাই ওঁদের কাছে মহল ৷ এখন সেখান থেকে তাঁরা ত্রাণশিবিরে গিয়ে সেবার খিচুড়ি খাচ্ছেন ৷ খুব খারাপ অবস্থা ৷ এরকমটাই যদি চলতে থাকে, তাহলে আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের কাছে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির আবেদন জানাব ৷"
তিনি আরও বলেন, "আর এটা যদি নাও হয়, অন্তত নির্বাচনটা যেন সেনার নিরাপত্তায় হয় ৷ তাহলে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে ৷ আমরা মারামারি চাই না ৷ আমাদের ভোট করতেই দেওয়া হয়নি ৷" মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় বাংলাদেশের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশের ঘটনায় তিনি বিএসএফ-কে দায়ী করেছেন ৷ অশান্তির ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকেই বারবার দুষেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ৷
এই প্রসঙ্গে মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, "আপনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বিএসএফ-কে দোষ দিচ্ছেন ৷ মেনে নিলাম যে বিএসএফ ব্যর্থ হয়েছে ৷ কিন্তু তারপর যে জমিটা রয়েছে, সেখানে তো পুলিশ রয়েছে ৷ তাহলে আপনার পুলিশ কী করছিল ? পুলিশ তো দেখছে, তাহলে তখন তারা কী করছে ?"
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে মিঠুন তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন ৷ তারও আগে পশ্চিমবঙ্গে যখন বামফ্রন্টের শাসন ছিল, তখন সেই সরকারের সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক ছিল ৷ এদিন তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ঘটনাকে ভুল বলে উল্লেখ করেন মহাতারকা মিঠুন ৷ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "ওটা আমার ভুল হয়েছিল ৷ সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেস অন্য রকম দল ছিল ৷ তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য এক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ৷ তিনি একজন ফাইটার ছিলেন ৷ মানুষের ভালো করার ইচ্ছা ছিল তাঁর মধ্যে ৷ গরিবদের পাশে দাঁড়ানোর ভাবনা ছিল ৷ আর আজকের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু ক্ষমতালোভী ৷ যে কোনও ভাবে ক্ষমতা চাই তাঁর ৷"
অসমে বরাক সাংস্কৃতিক উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তীকে ৷ সেই উৎসবে সামলি হতেই তিনি অসম গিয়েছেন ৷ সেখানে তিনি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার ভূয়সী প্রশংসা করেন ৷ মিঠুনের কথায়, "ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একজন শক্তিশালী মুখ্যমন্ত্রী ৷ তাঁর মেরুদণ্ড শক্ত ৷ তাঁর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও তুলনাই হয় না ৷" গত বছর অক্টোবরে একটি অনুষ্ঠানে মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তীর হাতে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৷
