মিলেট শস্য স্বাস্থের পক্ষে উপকারী

author img

By

Published : May 24, 2021, 1:41 PM IST

প্রতীকী ছবি

জোয়ার-বাজরার মতো শস্য প্রাচীন শস্যের তালিকা ভুক্ত । প্রযুক্তিগত বীজ হলেও,শস্য হিসেবে বাজরা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী । একে একাধিক ভাবে ব্যবহার করা যায় । ইটিভি ভারত সুখীভব চিকিৎসক কুর্তি এস ধিওয়ানি, এমডি, এমএসসি-র সঙ্গে কথা বলেছিল মুম্বইয়ের সানসাইন ৷

রাগী বা নাচনি ময়দা : আপনি যদি শরীরের পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার দিকে নজর দেন তাহলে রাগীর ময়দা সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকর । এটি অঙুরের বাজরা নামেও পরিচিত । ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, অ্যামিনো অ্যাসিড পাওয়া যায় এর থেকে । এই ময়দা রক্তাল্পতা নিরাময়, মধুমেয় রোগ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর । এই ধরনের ময়দা থেকে ধোসা, কুকিজ, বিস্কুট তৈরি হয় । এই ধরনের ময়দা থেকে সুস্বাদু রুটি তৈরি হয় ।

জোয়ারের আটা বা ময়দা : জোয়ার থেকে তৈরি হওয়া ময়দা বা আটা ভিটামিন বি 12 , ভিটামিন এ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ফাইবার পাওয়া যায় । কোষে রক্ত সঞ্চালন, চুলের গাঢ়ত্ব বৃদ্ধি, চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে । ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষে এই আটা অত্যন্ত কার্যকর । হজমের সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য যাঁদের আছে, তাদের পক্ষে এই আটা উপকারী । জোয়ার প্রাকৃতিকভাবে আঠালো ।

বাজরার ময়দা : অধিক তাপমাত্রা যুক্ত অঞ্চলে সাধারণত এই ধরনের বাজরা ব্যবহার করা হয় । এর থেকে ভিটামিন এবং খনিজ দ্রব্য পাওয়া যায় । প্রোটিনের পাশাপাশি ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ফাইবার জাতীয় পদার্থের পাশাপাশি ভিটামিন-ই, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, নিয়াসিন, থায়ামিনের উৎস সমৃদ্ধ এই আটা ।

যে সব ব্যক্তিদের হৃদযন্ত্রের সমস্যা আছে, যাঁদের কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, এই আটা সে সব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে ।

এই ধরনের ময়দা একটু শুকনো প্রকৃতির হয় । প্রয়োজনে এর সঙ্গে ঘি ব্যবহার করা যেতে পারে ।

রাজগিরা আটা : রাজগিরা এমন একটি বীজ যা পশ্চিমের দেশগুলিতে বিশেষ জনপ্রিয় । তবে ভারতে এই জাতীয় শস্যের তেমন চল নেই । নিরামিষ খাবার হিসেবে উপবাসের সময় এই আটা ব্যবহার করা হয় । এতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, দস্তা, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, এবং ভিটামিন সি পাওয়া যায় এর থেকে । হৃদরোগ, ক্যান্সার, স্ট্রোটের মতো রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সহায়তা করে । বাতের সমস্যা যাঁদের আছে, তাদের এই আটার তৈরি রুটি কার্যকর । তবে, এই আটা তৈরি করার সময় কয়েকটা দিকে নজর দেওয়া জরুরি ।

ফাইটিক অ্যাসিড মুক্ত করতে বা এনজাইম মুক্ত করতে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হয় । এর ফলে হজমে সহায়ক হয় । ভিজিয়ে রাখার পর সূর্যের আলোতে শুকানো উচিত । পুরো শুকিয়ে গেলে তখনই একে গুড়ো করা উচিত ।

মিলেট বা বাজরার পুষ্টি বাড়ানোর জন্য দইয়ের মধ্যে ভিজিয়ে রাখা হয় । যা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী । এ ছাড়াও বাজরা এবং দই প্রি বায়েটেক এবং প্রো বায়োটেক হিসেবে কাজ করে । অন্ত্রের সমস্যা মেটানোর পাশাপাশি হজমের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা নেয় ।

আরও পড়ুন : বিশ্ব হাইপারটেনশন দিবস 2021

ঋতু পরিবর্তনের সময় সাধারণ ভাবে মিলেট খাওয়া হয় । শীত প্রধান দেশে আঙুরের বাজরার প্রচলন বেশি । অন্য দিকে, একটু গরম প্রধান অঞ্চলে অন্যান্য বাজরার প্রচলন আছে ।

প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ার ফলে ছোটদের জন্য এই শস্য অত্যন্ত উপকারী । শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ,অন্ত্রকে সুস্থ রাখতে এটি খুবই কার্যকর । পেশি মজবুত করতে এবং পেশি সঞ্চালন সতেজ রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় ।

মিলেটে গাইট্রোজেনের পরিমাণ খুব কম থাকে । থাইরয়েডের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে । কিডনির সমস্যা আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে অবশ্য চিকিৎসকদের পরামর্শে এটা খাওয়া প্রয়োজন ।

আপনার অন্য যেকোনও প্রশ্নের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন - namaste@drkrutidhirwani.com

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.