TMC Leader Death : দেগঙ্গায় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার

author img

By

Published : Sep 13, 2021, 10:44 PM IST

তৃণমূল নেত্রী

মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ইউনিফর্ম কিনতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ওই তৃণমূল নেত্রীর স্বামী । দেগঙ্গা বাজারের একটি দোকানে ইউনিফর্ম কিনে কিছুক্ষণ পর বাড়িতে ফিরে আসেন তাঁরা । বাড়ি ফিরে ঝুলন্ত অবস্থায় তৃণমূল ওই নেত্রীকে দেখেন তাঁর স্বামী ও মেয়ে ৷

দেগঙ্গা, 13 সেপ্টেম্বর : তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল ঘর থেকে । ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় । মৃতার নাম পম্পা দত্ত (32) । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থানে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে । পরে, ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি পাঠানো হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে ।

মৃত ওই তৃণমূল নেত্রীর বাড়ি দেগঙ্গা এক নম্বর পঞ্চায়েতের আমিনপুরে । তাঁর স্বামী টুটুল দত্ত জলসম্পদ বিভাগে কর্মরত । মেয়ে তিতলি এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করেছে । সে দেগঙ্গারই একটি স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে । মেয়ের স্কুলের ইউনিফর্ম কেনা নিয়ে দম্পতির মধ্যে আলোচনা হয় এদিন সকালে । এরপর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ইউনিফর্ম কিনতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান টুটুল । বাড়িতে একাই ছিলেন পম্পা । দেগঙ্গা বাজারের একটি দোকানে ইউনিফর্ম কিনে কিছুক্ষণ পর বাড়িতে ফিরে আসেন মেয়ে ও বাবা । লক্ষ্য করেন, পম্পার ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ । অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়াশব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয় দু'জনের । জানালা দিয়ে উঁকি মারতেই দেখেন, পম্পা ঘরের সিলিং ফ্যানে কাপড় দিয়ে ঝুলছেন । শুরু হয় চিৎকার-চেঁচামেচি । চিৎকার শুনে সেখানে আসেন প্রতিবেশীরা । খবর যায় দেগঙ্গা থানায় । পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থানে এসে দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত দেহ নিচে নামায় । সঙ্গে সঙ্গে ওই তৃণমূল নেত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে । সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।

আরও পড়ুন : TMC Inner Clash : তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের অনুষ্ঠান ঘিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, স্বীকার সৌগতর

জানা গিয়েছে, 2008 সাল থেকে টানা পাঁচ বছর দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে ছিলেন পম্পা দত্ত । বর্তমানে ওই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তিনি । দক্ষ সংগঠক হিসেবে বরাবর এলাকায় পরিচিত ওই তৃণমূল নেত্রী । সকলের সঙ্গেই মিশতে পারতেন তিনি । আপদ বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়াতেন । সেই কারণে এলাকাবাসী থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতৃত্ব সকলেরই প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন ৷ স্থানীয় বাসিন্দারা বুঝে উঠতে পারছেন না, কেন তিনি এমন পরিণতির পথ বেছে নিলেন ।

খবর পেয়ে দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে ভিড় জমাতে শুরু করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা । আসেন স্থানীয় বিধায়ক রহিমা মণ্ডল, দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিদুল হক সাহাজি, জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ এ কে এম ফারহাদ সহ তৃণমূলের আরও অনেকে । প্রত্যেকেই সমবেদনা জানান নিহতের পরিবারকে ।

এই বিষয়ে দেগঙ্গার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও তৃণমূল নেতা মফিদুল হক সাহাজী বলেন, "পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে পম্পার কাছ থেকে ভাল উপদেশ সবসময় পেয়েছি । তিনি প্রশাসনিক বিষয়টি খুব ভাল বুঝতেন । সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দলের কাজকর্ম করতেন । তাঁর মৃত্যুতে দলের অপূরণীয় ক্ষতি হল ৷" তাঁর কথায়, "রবিবার দেগঙ্গার একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন পম্পা । সেখানে তাঁকে মনমরা হয়ে থাকতে দেখেছি । নিচ থেকে তাঁকে মঞ্চে ডেকে আনি । কী কারণে মনমরা ছিলেন, সেটা জানতে পারলে হয়ত বোঝাতে পারতাম । সেটা আফসোস রয়ে গেল ৷"

আরও পড়ুন : Deganga Gangrape : আটদিনের মাথায় ফের নাবালিকাকে গণধর্ষণ দেগঙ্গায়

অন্যদিকে,দুপুরের দিকে ওই তৃণমূল নেত্রীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয় বারাসত জেলা হাসপাতালের মর্গে । সেখানে গিয়ে সুষ্ঠুভাবে যাতে ওই তৃণমূল নেত্রীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়, তা দেখার জন্য দেগঙ্গার দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়ে যান তৃণমূলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় । মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, "এ কে এম ফারহাদের কাছ থেকেই প্রথম খবরটা পাই । শুনে স্তম্ভিত আমি । ওর মতো একজন প্রাণচঞ্চল মেয়ে এরকম হঠকারী সিদ্ধান্ত নেবে, তা ভাবাই যায় না । ওর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও আমার । একটু বলতে পারি, ওর মৃত্যুতে সংগঠনের ক্ষতিই হল ৷"

ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ ৷ পারিবারিক সমস্যা নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে ।

আরও পড়ুন : Murder : 20 হাজার টাকার জন্য যুবককে খুন জগদ্দলে

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.