Durga Puja 2022: ষষ্ঠীতে নিরঞ্জন, নবমীতে অসুর-দুর্গার লড়াই ! এই পুজোর অদ্ভূত নিয়ম

author img

By

Published : Sep 21, 2022, 10:50 PM IST

Durga Puja 2022

আসিবাসীরা মূর্তি পুজোয় বিশ্বাস করেন না। কিন্তু এই বাংলায় এমন মন্দিরও আছে যেখানে সাঁওতাল মন্ত্রোচ্চারণে আদিবাসীরা করেন দেবী দুর্গার আরাধনা। শুধু তাই নয় অদ্ভূত নানান নিয়মে ব্যতিক্রমী দুর্গাপুজো হয় কুলটির নিয়ামতপুরে সিংরাই মারান্ডির আশ্রমে (Durga Puja Celebration in kulti)। এখানে নবমীর দিন অসুর-দুর্গার যুদ্ধকে সামনে রেখে সত্যি লড়াইয়ে মাতে শয়ে, শয়ে নারী-পুরুষ।

আসানসোল, 21 সেপ্টেম্বর: কুলটির নিয়ামতপুরে ইসকো বাইপাস রাস্তার পাশেই গাছগাছালি ভরা সিংরাই মারান্ডির আশ্রম। 1975 সালে এই আশ্রম তৈরি করেছিলেন সিংরাই মারান্ডি। স্বপ্নাদেশ পেয়ে নিজেকেই দেবতা ঘোষণা করে, নিজের মূর্তি বানিয়ে পুজো শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি আরও অনেক দেবদেবীর পুজো প্রচলন হয়। যার মধ্যে দুর্গাপুজো অন্যতম (Durga Puja)। এই পুজোয় নবমীর দিন অসুর-দুর্গার লড়াইকে সামনে রেখে মহিলা পুরুষরা সত্যি লড়াইয়ে মাতেন।

সিংরাই মারান্ডি কয়েকবছর হল মারা গিয়েছেন। বর্তমানে তাঁর উত্তরসূরি ও ভক্তকুলেরা এই পুজো চালিয়ে আসছেন। এই পুজোয় বেশ কয়েকটি অদ্ভুত নিয়ম রয়েছে। এখানকার দুর্গা প্রতিমা সারাবছর থাকে (Durga Puja Celebration in kulti) । ষষ্ঠীর দিন পুরোনো প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। সেদিনই মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হয় নতুন প্রতিমা। নতুন প্রতিমা পুজোর পরেও থেকে যায় সারাবছর। এখানে দুর্গাপুজোয় অনান্য সাধারণ নিয়মের দেখা মেলে না। বরং আদিবাসীরা নিজেদের মত করেই দেবীর আরাধনা করেন।

আদিবাসী মন্ত্রোচ্চারণেই এই পুজো হয়। পুজোর উপকরণ জল, ফুল আর বেলপাতা। ভোগে শুধুই ফল দেওয়া হয়। যদিও ভক্তকূলের জন্য রোজই হয় খিচুড়ির আয়োজন। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা সিংরাই মারান্ডি ও তাঁর স্ত্রী এই যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। এখন শয়ে, শয়ে ভক্তকূল নারী ও পুরুষ মণ্ডপ চত্বরে রীতিমতো চুলোচুলিতে জড়িয়ে যায়। অল্পবিস্তর আহতও হয় অনেকে। এই যুদ্ধের বিচারক থাকার জন্য একটি নরসিংহ দেবতার মূর্তিও রাখা হয় মন্দিরে।

নবমীতে অসুর-দুর্গার সত্যি লড়াই, ষষ্ঠীতে নিরঞ্জন, অদ্ভূত নিয়ম আদিবাসী পুজোয়

আরও পড়ুন: আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখাই চ্যালেঞ্জ সোমড়ার 'জমিদার'দের

দুর্গার পাশে এমন মূর্তি ভূ-ভারতে দেখা যায় না আর। এই পুজোয় বাংলার বিভিন্ন জেলা থেকে তো বটেই ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা থেকেও আদিবাসীরা দলে-দলে জমায়েত হন ষষ্ঠী থেকেই। ঢাক বাজে না, বরং চারদিন ধরে ধামসা মাদলের গানে, নাচে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন হাজার হাজার মানুষ। এই বাংলায় এমনও ব্যতিক্রমী দুর্গাপুজোর সাক্ষী থাকতে অনেক সাধারণ মানুষও উপস্থিত হন সিংরাই বাবার আশ্রমে।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.