Digitisation of Santhali Journals: সাঁওতালি ভাষার পত্রপত্রিকার ডিজিটাল রূপদানে সাফল্য যাদবপুরের

author img

By

Published : Jan 20, 2023, 8:05 PM IST

ETV Bharat

নয়া সাফল্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৷ সাঁওতালি ভাষায় লেখা পত্র-পত্রিকা ডিজিটাইজশনের কাজ প্রায় শেষের পথে (work on Santhali Journals)৷

সাঁওতালি ভাষার পত্র-পত্রিকার ডিজিটাইজেশনের কাজ করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

কলকাতা, 20 জানুয়ারি: সাঁওতালি ভাষায় লেখা কয়েক হাজার দুষ্প্রাপ্য পত্র-পত্রিকা এবার একত্রিত করে ডিজিটাল মাধ্যমে রূপান্তরিত করার কাজ শেষ করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University)। প্রসঙ্গত, সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর সদস্যরা এই ভাষায় কথা বললেও বর্ণমালার অভাবে লেখার চল ছিল না প্রথম দিকে । এরপর খ্রিষ্টান মিশনারিদের হাত ধরেই সাঁওতালি ভাষা তার লিখিত রূপ পায় ।

ইতিহাসের বই ঘাঁটলে দেখা যাবে যে, 1869 খ্রিষ্টাব্দে সাঁওতাল পরগনার লুথারিয়ান মিশনে স্থাপিত একটি ছাপাখানায় প্রথম সাঁওতাল ভাষার ব্যাকরণ বই ছাপা এবং প্রকাশ করা হয় । তারপর ওই ছাপাখানা থেকে সাঁওতালি ভাষায় আরও বই প্রকাশিত হয় । এরপর পশ্চিমবঙ্গে রঘুনাথ মুর্মু সাঁওতালি বর্ণমালা তৈরি করেন, যা অলচিকি নামে পরিচিত । পরে এই অলচিকি লিপি সরকারি স্বীকৃতি পায় (Digitisation work of Santhali Journals at JU)।

বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওসোনোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপিকা ডঃ রাহি সোরেনের তত্ত্বাবধানে এই বইগুলির ডিজিটাইজেশনের কাজটি রূপ পেয়েছে । তিনি ও তাঁর দল পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশার বিভিন্ন জায়গা থেকে এই পত্র-পত্রিকাগুলি সংগ্রহ করেছেন । মূলত 1890 সাল থেকে 1975 এর মধ্যে সাঁওতালি ভাষায় লেখা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা সংগ্রহ করে সেগুলির ডিজিটাল রূপ দেওয়া হয়েছে এখানে ।

আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্সির প্রতিষ্ঠা দিবসেও অব্যাহত থাকছে পড়ুয়াদের অবস্থান-বিক্ষোভ

এই প্রসঙ্গে রাহি সোরেনের বক্তব্য, "আমরা এই কাজ 2020 সালে শুরু করি । প্রায় 100 বছর আগে ছাপা হয়েছিল অনেক কাগজপত্র । এই কাজটি করার সময় বহু দুষ্প্রাপ্য বই, তথ্যভিত্তিক কাগজপত্র এবং পত্রপত্রিকা আমাদের হাতে আসে । এই ধরনের জিনিস আর এখন ছাপা হয় না । সাঁওতালি ভাষা পাঁচটি লিপিতে লেখা হয় ।"

রাহি আরও জানান, এখনও পর্যন্ত পাঁচ হাজার পাতা ডিজিটাইজ করার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে । ব্রিটিশ লাইব্রেরির এনডেঞ্জার্ড আর্কাইভস প্রোগ্রামের (endangered archives program) তহবিল থেকে এই কাজটি করার জন্য আর্থিক সহায়তা মিলেছে । এই কাজটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে অনলাইনে একেবারে বিনামূল্যে গবেষণারত পড়ুয়া-সহ যাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে পড়তে ইচ্ছুক তাঁরা সহজেই পেয়ে যাবেন ।

কিন্তু কীভাবে এই কঠিন ও সময় সাপেক্ষ কাজটি করা হল ?

এই কাজটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ডঃ অমৃতেশ বিশ্বাস ৷ এই বিষয়ে তিনি বলেন, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত স্কুল অফ কালচারাল টেক্সট অ্যান্ড রেকর্ডস বিভাগ এই কাজটি করেছে । এই পত্রপত্রিকাগুলিকে ডিজিটাইজ করার সময় আমাদের মাথায় রাখতে হয়েছে যাতে এগুলির আর্কাইভাল মান বজায় থাকে । তাই বিশেষ ধরনের ক্যামেরা এবং বিশেষ কিছু প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হয়েছে ।"

এই গবেষকরা জানিয়েছেন, পুরো কাজটি হয়ে যাওয়ার পরে এই পত্র-পত্রিকাগুলির ডিজিটাল রূপায়ণ যেমন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও থাকবে তেমনই রাখা থাকবে ব্রিটিশ লাইব্রেরির ডিজিটাল আর্কাইভে । প্রতিটি ডিজিটাল পাতার সঙ্গে সেই বিষয়ে তথ্যও দেওয়া থাকবে । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এই কাজটি প্রথম বার করল ৷ সম্ভবত পশ্চিমবঙ্গেও এই ধরনের কাজ এই প্রথম ৷ কোন সালে কীভাবে এগুলি লেখা হয়েছে কিংবা কোন মুদ্রণ যন্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, কোন সালের মুদ্রণ প্রযুক্তি তা কেমন ছিল, পাতার মানই বা কেমন ছিল এবং লেখার বিষয়বস্তু কী ছিল এই বিষয়গুলি জানতে হলে এই পত্র-পত্রিকাগুলির অবদান অনস্বীকার্য ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.