আরামবাগ (হুগলি), 11 জানুয়ারি : আরামবাগের তিরোল অঞ্চলের পুইন গ্রামে পৌষ সংক্রান্তির উৎসব পালিত হয় গ্রাম বাংলার পুরনো নিয়ম মেনে (Arambag Paush Parbon Dheki Story) ৷ পুইন গ্রামে পৌষ সংক্রন্তির পিঠে, পুলিতে ব্যবহার হওয়া চালের গুঁড়ো তৈরি করা হয় ঢেঁকিতে পিষে ৷ ঢেঁকিতে পেষা চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি করা হয়, পুলি পিঠে, চিতল পিঠে, পাটিসাপটা, গোকুল পিঠের মতো সুস্বাদু মিষ্টান্ন ৷ সেই সঙ্গে পুইন গ্রামের প্রতিটি ঘরে পৌষ সংক্রান্তিতে লক্ষ্মীপুজো হয় ৷ নতুন ধান তোলা হয় বলে মা লক্ষ্মীর পুজো হয় ৷
আগের দিনে শীতকালে নতুন ফসল ওঠার পর ঢেঁকিতে ধান ভাঙা হত (Arambag Dheki Story) ৷ এখন সময়ের তালে তাল মিলিয়ে উন্নত যন্ত্রে ধান ভেঙে চাল বের করা হয় ৷ আতপ চাল ঢেঁকিতে পিষে গুঁড়ো করা হত ৷ যে চাল দিয়ে নানা স্বাদের পিঠে তৈরি হত পৌষ সংক্রান্তিতে ৷ কিন্তু, আধুনিক যুগে উন্নত যন্ত্রের দৌলতে ঢেঁকি বিদায় নিয়েছে ৷ কিন্তু, হুগলির আরামবাগের তিরোল অঞ্চলের পুইন গ্রামের বাসিন্দা পুরনো সেই ধারাকে বয়ে নিয়ে চলেছেন ৷ এখনও শীতকালে ঢেঁকিতে আতপ চাল পেষা হয় পিঠে তৈরির জন্য ৷
আরও পড়ুন : Poush utsav starts in Santiniketan: এবারও নেই পৌষমেলা, পৌষ উৎসবে মাতল শান্তিনিকেতন
গ্রামের মহিলারা শীতের মিঠে রোদে বসে আতপ চালের গুঁড়ো তৈরি করেন ৷ বাড়ির পুরুষরাও মাঝে মধ্যে তাঁদের সাহায্য করেন ৷ এই গ্রামে পুইন স্কুলের মাঠে ঢেঁকিতে চাল ভাঙেন ৷ সেই চালের গুঁড়ো দিয়ে পৌষ সংক্রান্তিতে তৈরি হবে পিঠে ৷ তবে, শুধু পিঠে তৈরি নয় ৷ গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে নতুন ফসল তোলা উপলক্ষ্যে দেবী লক্ষ্মীর পুজোও করেন ৷ তবে, শুধু নিজেদের ব্যবহারের জন্য নয় ৷ দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসে পুইন গ্রামে ঢেঁকিতে ভাঙা আতপ চালের গুঁড়োর জন্য ৷ দিনে 10 থেকে 20 কিলো চাল ভেঙে গুঁড়ো করা হয় ৷ গ্রামের প্রায় পঁচিশ-তিরিশটি বাড়ির মহিলারা একসঙ্গে এই কাজ করেন ৷ তবে, কালের নিয়মে হয়তো হাতে গোনা কয়েকটি ঢেঁকিও একদিন বন্ধ হয়ে যাবে ৷ সেই সঙ্গে ইতিহাসের পাতায় এবং লোকমুখে শুধু ঢেঁকি শব্দটি বেঁচে থাকবে ৷
