Fourth class staff : ছুটি না-নিয়ে টানা 17 বছর কাজ করে নজির গড়লেন প্রেমলাল

author img

By

Published : May 12, 2022, 7:44 PM IST

The fourth class worker news

টানা সতেরো বছর ছুটি না-নিয়ে কাজ করে চলেছেন প্রেমলাল । ছুটিতেও হাজির স্কুলে (Fourth class staff)। নজির স্থাপন করেছেন ফাঁসিদেওয়ার মুরালিগঞ্জ হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী প্রেমলাল সিংহ ।

শিলিগুড়ি, 12 মে : সরকারি চাকরি মানেই মোটা টাকার বেতন, সারা বছরে বেশ ছুটি ৷ আর এই ছুটি কাটাতে কার না ভাল লাগে ( Fourth class staff)। এক দুটো বছর নয়, সতেরো বছরে একদিনও ছুটি নেন এক কর্মী । এমনটাই অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছেন প্রেমলাল সিংহ । তিনি শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগর এলাকার একটি মডেল স্কুল মুরালিগঞ্জ হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী । বাড়ি স্কুল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে জাগিরভিটা গ্রামে ৷

2004 সালে মুরালিগঞ্জ হাইস্কুলে কাজে যোগ দিয়েছেন প্রেমলাল । তখন স্কুল বলতে ছিল একটি বড় টিনের ঘর । প্রধানশিক্ষক সামসুল আলমের উদ্যোগে আজ সেই স্কুলই সারা রাজ্যে তো বটেই, দেশের মধ্যেও মডেল স্কুল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে । দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়েছে ওই স্কুলের নাম । আর সেই সময় থেকে সামসুল আলমের সঙ্গে স্কুলকে তিলে তিলে গড়তে সাহায্য করেছেন এই প্রেমলাল । গেট খোলা থেকে গাছে জল দেওয়া, ক্লাসের দরজা খোলা থেকে ভোকেশনাল কোর্সের পড়াশোনায় পড়ুয়াদের সাহায্য করা । আবার ফাইল আনা নেওয়া হোক বা ব্যাংকের কাজ থেকে ঘন্টা বাজানো । সবটাই দক্ষতার সঙ্গে বছরের পর বছর সামলে আসছেন তিনি ।

সতেরো বছর ছুটি না নিয়ে কাজ করে চলেছেন প্রেমলাল

স্কুল পড়ুয়াদের কাছে প্রেমলাল কাকু হিসেবে পরিচিত তিনি ৷ এভাবে টানা কাজ করে যাওয়ায় একাধিক স্বীকৃতিও পেয়েছেন । কখনও আবার উঠে এসেছেন শিরোনামেও । যার ফলে প্রেমলালের মতো সৈনিক পেয়ে আজ গর্বিত স্কুল পড়ুয়া থেকে শিক্ষকরা । ছুটি নেওয়ার কথা বললেই মুচকি হেসে উত্তর দেন, "স্কুলটাকে নিজে হাতে তৈরি করেছি, প্রত্যেকে খুব ভাল, স্কুলটা আমার একটা ছেলের মতো । খুব মায়া । তাই আর না-এসে থাকতে পারি না । চাকরির বাকি জীবনটাও একইভাবে কাটাতে চাই ৷ প্রথমে স্ত্রী একটু রাগারাগি কর‍ত । পরে বুঝে গিয়েছে ।"

আরও পড়ুন : শহরে যানজট সমস্যা সমাধানে কড়া শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট

স্কুলের প্রধানশিক্ষক সামসুল আলম বলেন, "আমরা প্রেমলালের জন্য খুব গর্বিত । আমি এই স্কুলে যোগ দেওয়ার পরই প্রেমলালও কাজে যোগ দেয় । অদ্ভুত মানুষ । ছুটি না-নিয়ে দিব্যি কাজ করে চলছে । একবার তো স্ত্রীর অসুখ হল । মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন । কিন্তু স্ত্রীকে হাসপাতালে রেখেও কাজে চলে এসেছে । এই ধরনের কর্মী থাকলে কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যায় ।" স্কুলের আরেক শিক্ষক ফিরাজুল ইসলাম বলেন, "প্রেমলাল একটা নজির তৈরি করে দেখিয়েছে । আমাদের কাছে প্রেমলাল একটা অনুপ্রেরণা ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.