পাঁড়ুই, 2 ডিসেম্বর: ঘুঘু ধরার ফাঁদ, শেয়াল ধরার ফাঁদ দেখেছেন কখনও ? কিংবা দিক নির্দেশকের জন্য মোষের সিং-এর সিঙ্গা, সাকোয়া ? এই সবই দেখা যাবে পাড়ুইয়ের প্রত্যন্ত বিষ্ণুবাটি গ্রামে ৷ বিমল বাস্কি নামে এক ব্যক্তি সাঁওতাল (Santali lifestyle) জনজাতির ব্যবহৃত শিকারের সামগ্রী থেকে শুরু করে তাদের সংস্কৃতির সরঞ্জাম নিয়ে অভিনব সংগ্রহশালা (Birbhum Santali Museum) তৈরি করেছেন ৷ 100 থেকে 120 বছরের প্রাচীন সাঁওতাল জনজাতির ব্যবহৃত সামগ্রী রয়েছে এখানে ৷ এছাড়াও হাজার বছরের প্রাচীন পাথরের লিপি ও ভাস্কর্যের দেখা মেলে এই সংগ্রহশালায় ৷ 2007 সাল থেকে এই সমস্ত কিছু সংগ্রহ করে চলেছেন বিমলবাবু ৷ যা মানুষজনকে আকৃষ্ট করে ৷
বীরভূমের (Birbhum news) পাড়ুই থানার কসবা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুবাটি গ্রাম ৷ এই গ্রামে বিমল বাস্কি নামে এক ব্যক্তি 'মাঝি পরগনা সাঁওতাল সংগ্রহশালা' তৈরি করেছেন ৷ এখানে এলে দেখা মেলে সাঁওতাল জনজাতির ব্যবহৃত শিকারের বিভিন্ন সামগ্রী । কথায় বলে 'ঘুঘু দেখেছো, ফাঁদ দেখোনি'। কিন্তু, এই সংগ্রহশালায় রয়েছে সাঁওতাল জনজাতির ব্যবহৃত ঘুঘু ধরার সেই ফাঁদ ৷ এ ছাড়াও রয়েছে শেঁয়াল, বক, তিতির, মেঠো ইঁদুর, গর্তের বড় ইঁদুর ধরার ফাঁদও। আছে হাতে তৈরি মাছ ধরার বিভিন্ন সামগ্রী ।
আরও পড়ুন: KP initiative to stop accident : দুর্ঘটনা রুখতে রাতের চালকদের চা-বিস্কুট খাওয়াচ্ছে কলকাতা পুলিশ
শুধু তাই নয়, সাঁওতাল জনজাতির ব্যবহৃত প্রাকৃতিক জিনিস দিয়ে তৈরি বাদ্যযন্ত্রও রয়েছে এখানে ৷ একসঙ্গে দল বেঁধে যখন দূরে কোথাও তারা যেত, সেই সময় সিঙ্গা নামে এক বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করত তারা ৷ এর শব্দ শুনে এক দল, অপর দলকে খুঁজে পেত ৷ এ ছাড়াও পুজো, বিয়ে প্রভৃতিতে মোষের সিং দিয়ে তৈরি সাকোয়া, ধামসা, মাদল, লাগরা, বাঁশের তৈরি বানাম প্রভৃতি ব্যবহার করা হত ৷
আরও পড়ুন: Bankura Farmer: ডাবল এমএ-বিএড দেবনাথ অভাবী কৃষক, সংসার চলছে কিশোরী-কন্যার উপার্জনে
বিমল বাস্কি বলেন, "আদিবাসী, সাঁওতাল জনজাতি কেমন ছিল, কীভাবে, কী কী ব্যবহার করে শিকার করত, কী কী বাদ্যযন্ত্র কোন কোন সময় ব্যবহার করা হত, এই সবই সংগ্রহশালায় আছে ৷ যাতে বর্তমান প্রজন্ম জানতে পারে সাঁওতাল জনজাতির ইতিহাস ৷ প্রাচীন সব সামগ্রী সংগ্রহ করে এটা আমি করেছি ৷ 2007 সাল থেকে এই সংগ্রহশালা চালাচ্ছি ৷"
প্রায় 100 থেকে 120 বছরের প্রাচীন 170টি সামগ্রী রয়েছে এই সংগ্রহশালায় । বেশ কিছু ভাস্কর্য, শিলালিপিও রয়েছে । যেগুলো প্রায় এক থেকে দেড় হাজার বছর আগের ৷ তাদের পুজো-পার্বণের নিয়মাবলীর ছবি, ব্যবহৃত গয়নাও সংগ্রহ করা হয়েছে । এক কথায় এই সংগ্রহশালায় সাঁওতাল জনজাতির জীবনযাত্রা তুলে ধরা হয়েছে ৷ প্রতিদিন সকাল 10টা থেকে বিকেল 5টা পর্যন্ত খোলা থাকে সংগ্রহশালাটি ৷