Tales of Love: আফতাবের নৃশংসতাতেও প্রেমের 'সৌরভ' ছড়াচ্ছেন বিতুপান-সব্যসাচী

author img

By

Published : Nov 21, 2022, 8:03 PM IST

Updated : Nov 22, 2022, 2:52 PM IST

Sabyasachi Chowdhury and Bitupan Tamuli like people bring back faith on Love

শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের খলনায়ক আফতাব আমিন পুনাওয়ালারা (Aaftab Amin Poonawalla) যেমন বাস্তব, তেমনই ঘোর বাস্তব হলেন সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury), বিতুপান তামুলিরা (Bitupan Tamuli) ৷ তাঁদের 'কাহিনি' (Tales of Love) ভালোবাসায় ভরসা ফেরায় ৷

হায়দরাবাদ, 21 নভেম্বর: চলতি মাসের 14 তারিখ ৷ সারা দেশকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল একটামাত্র 'খবর' ! 28 বছরের এক তরুণ ৷ পুলিশের দাবি, সে নাকি প্রেমিকার শরীরের 35 টুকরো করেছে ! তারপর সেই দেহখণ্ড ছড়িয়ে দিয়েছে শহরের আনাচ-কানাচে ! এমন হাড়হিম কাণ্ড শুনে অনেকেরই দম বন্ধ হওয়ার জোগাড় ৷ অনেকে আবার বলছেন, এই 'জেনারেশন'টাই নাকি যা তা ! এদের না-আছে আবেগ, না-অন্তর ৷ এরা কাউকে ভালোবাসতে জানে না ৷ এরা বোঝে শুধু নিজেদের স্বার্থ ! সত্যিই কি তাই ? একটা নৃশংসতা, একটা পৈশাচিক ঘটনাই কি একটা গোটা প্রজন্মের আবেগের, তাদের ভালোবাসার মাপকাঠি হতে পারে ? প্রশ্নটা উঠছেই ৷ কারণ, এই দেশ যেমন দিল্লির 'জল্লাদ'কে দেখেছে, তেমনই সাক্ষী থেকেছে আরও অনেক 'কাহিনি'র ৷ যা বিশ্বাস ফিরিয়েছে প্রেমে, ভালোবাসায়, আবেগে ৷

খুনের দায় থেকে বাঁচতে প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারের (Sharaddha Walker) নিথর দেহ টুকরো, টুকরো করেছিল প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা (Aaftab Amin Poonawalla) ৷ সে ব্যস্ত ছিল রক্তের দাগ মুছতে, খণ্ড-বিখণ্ড প্রণয়ীকে লোকচক্ষুর আড়ালে লুকিয়ে ফেলতে ৷ তাকে নিয়ে চর্চা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই প্রেয়সীর অন্তিম শয্যার পাশে বসেছিলেন বিতুপান তামুলি (Bitupan Tamuli) ৷ অসমের কোনও এক অখ্যাত গ্রামে প্রয়াত প্রেমিকার সিঁথি সিঁদুরে রাঙিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি ! মাত্র কয়েক দিনের অসুখে বিতুপানকে চিরকালের মতো ছেড়ে চলে যান প্রার্থনা বোরা (Prarthana Bora) ৷ ভালোবাসার এমন পরিণতি শেষমেশ মেনে নিয়েছেন বিতুপান ৷ পণ করেছেন সারাজীবন একা থাকার ! আর তাই শেষকৃত্য়ের আগে প্রেমের মানুষটিকেই দিয়েছেন অর্ধাঙ্গিনীর স্বীকৃতি ৷ হোক না তাঁর দেহ নিথর ! তাতে কী !

আরও পড়ুন: মৃত্যু নিয়ে তামাশা নয়, কী করছেন ভেবে করুন; অনিন্দ্য

প্রার্থনা-বিতুপানের ট্র্য়াজেডি ফিরে এসেছে শহর কলকাতায় ৷ নভেম্বরের এক রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় ৷ গোটা বিশ্ব যখন ফুটবল বিশ্বকাপের জ্বরে কাঁপছে, ঠিক তখনই টিভি, মোবাইলের স্ত্রিনে ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচীকে দেখে গায়ে কাঁটা দিয়েছে বাঙালির ৷ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কাছের মানুষকে আঁকড়ে থেকেও তাঁকে বাঁচাতে পারেননি সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury) ৷ তাঁর কাছ থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma) ৷ তাঁদের প্রেম যেন রূপকথা ৷ শেষ শয্য়ায় ঐন্দ্রিলাকে নিজের হাতে চন্দন পরিয়ে দিয়েছেন তাঁর সব্য়সাচী ৷ প্রাণহীন প্রেমিকার দুই পায়ের পাতা আলতো হাতে তুলে ধরেছেন তিনি ৷ দুই ঠোঁটের ছোঁয়ায় এঁকে দিয়েছেন ভালোবাসার চিহ্ন ৷ ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর পরই ফেসবুক থেকে বিদায় নিয়েছেন সব্যসাচী ৷ গুটিয়ে নিয়েছেন নিজেকে ৷

বিতুপান, সব্যসাচীরাও সেই প্রজন্মেরই প্রতিনিধি, যে প্রজন্মের সদস্য আফতাব ! সে এক ব্যক্তি মাত্র ৷ তার বেশি কিচ্ছু নয় ৷ একথা বোঝার জন্য মনোবিজ্ঞানের ভারী বই পড়ার প্রয়োজন নেই ৷ আফতাবদের দেখে যখন বুক কেঁপে ওঠে, তখনই আপামর জাতির আশ্রয় হন বিতুপান, সব্যসাচীরা ৷ তাঁদের ভালোবাসার গল্প (Tales of Love) বাকিদেরও ভালোবাসতে শেখায় ৷ ভালোবাসায় ভরসা রাখতে, বিশ্বাস করতে শেখায় ৷

Last Updated :Nov 22, 2022, 2:52 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.